ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ফিরে দেখা ২০১৪

ভোলায় ৪৫ হত্যাকাণ্ড, নৌ দুর্ঘটনা

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪
ভোলায় ৪৫ হত্যাকাণ্ড, নৌ দুর্ঘটনা ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ভোলা: ২০১৪ সালে বছরজুড়ে বিভিন্ন সড়ক ও নৌ দুর্ঘটনার ‍কারণে আলোচিত ছিল ভোলা জেলা।

চলতি বছরে জেলায় অন্তত ৪৫ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

যার বেশিরভাগ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা এখনো বিচার‍াধীন। এর মধ্যে তিনটি মামলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইড) হাতে তদন্তনাধীন রয়েছে।

গত ১২ মাসে জেলায় ১০ নৌ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে জেলেসহ ৫ যাত্রীর। নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে এখনও নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ২০ জেলে।

এছাড়া বছরজুড়েই নদীতে টহলরত কোস্টগার্ড ও পুলিশ  অস্ত্রসহ দস্যু আটক ও বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে।

আদালত পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে জেলায় ৪৫ হত্যাকাণ্ডের মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ৫টি, মার্চ মাসে ২টি, এপ্রিল মাসে ৫টি, মে মাসে ১টি, জুন মাসে ৪টি, জুলাই মাসে ৪টি, আগস্ট মাসে ৩টি, সেপ্টেম্বর মাসে ৮টি, অক্টোবর মাসে ৫টি, নভেম্বরে ১টি ও ডিসেম্বর মাসে ৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটে।

এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সদর উপজেলায় ৮টি, দৌলতখান উপজেলায় ৬টি, তজুমদ্দিনে ২টি, বোরহানউদ্দিনে ৮টি, লালমোহনে ১১টি, চরফ্যাশনে ৬টি, দক্ষিন আইচায় ২টি ও শশীভূষণ থানা এলাকায় ২টি সংঘটিত হয়। তবে মনপুরা উপজেলায় কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।

এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রহিম ও সদর উপজেলার ইউনিয়নের রাজাপুর ইউনিয়নের ইউনুস পন্ডিত হত্যা মামলা সিআইডি তদন্ত করছে।
 
পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা ভোলা সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কাজল বাংলানিউজকে বলেন, এ দুটি মামলা গুরত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এছাড়া গত বছরের খুকুমনি হত্যার মূল আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করে বেশিরভাগ মামলার চার্জশিট  দিয়েছে। বেশকিছু মামলার তদন্ত চলছে। তবে দু’একটি ঘটনায় আদালতে মামলা হলেও পুলিশের তদন্তে তা প্রমাণিত হয়নি।
 
এদিকে, জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় গত ১২ মাসে নারী ও শিশুসহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর, নদী, খাল, বাগানসহ বিভিন্ন পরিত্যক্ত স্থান থেকে ১৭ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়াও ২১ ডিসেম্বর বাংলাবাজারের খাল থেকে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

জেলার আলোচিত ঘটনার মধ্যে আরেকটি হলো, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের দায়ে জেলা প্রশাসন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানে ৩৬২ জেলেকে কারাদণ্ড প্রদান।

আলোচিত অন্যান্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে, ৩০ আগস্ট ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের ৩ নম্বর কূপ থেকে পরীক্ষামূল গ্যাস উত্তোলন ও চতুর্থ কূপের খননকাজ শুরু। এ গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাসভিত্তিক ২২৫ মেগাওয়াট  ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার প্লান্ট মেশিন চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আরো ২২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার প্লান্ট মেশিন স্থাপনের।

এদিকে, ১৮ জুলাই বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে দৌলতখানের ১১ জেলে নিখোঁজ হন। নিখোঁজ রয়েছেন  লালমোহনের ৪ জেলে ও চরফ্যাশনের ৫ জেলে। সেসব পরিবারে থামছে না স্বজনদের কান্না। নিখোঁজদের ফেরার পথ চেয়ে আছেন স্বজনরা।

অন্যদিকে, কোস্টগার্ড চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর মনপুরার মেঘনা নদী থেকে অস্ত্রসহ ১১ দস্যুকে আটক করা হয়।

অপরদিকে, আলোচিত পিনাক লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত লঞ্চের ১০ যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় ভোলার মেঘনার বিভিন্ন এলাকা থেকে।

এছাড়া চলতি বছরের জুলাই-মার্চ মাসে কয়েদ দফা বন্যায় পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ দিন পার করতে হয়েছে জেলার ৬০ গ্রামের বাসিন্দাদের। বন্যায় মারা যায় ৩ শিশু।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।