যশোর: যশোর শহরের লোনঅফিস পাড়ায় নিউ যমুনা নামে একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির গোডাউনে আগুন লেগেছে। এতে কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির ম্যানেজার।
শুক্রবার (০৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে যশোর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শনিবার (১০ জানুয়ারি) ভোর ৫টা পর্যন্ত আগুন নেভানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক পরিমল চন্দ্র কুন্ডু বাংলানিউজকে বলেন, আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তার নেতৃত্বে যশোর, ঝিকরগাছা ও মণিরামপুরের তিনটি ইউনিট কাজ করছে। গোডাউনটির ভেতরে মবিল, গ্রিস, লুব্রিকেট, সুতার তৈরি কাপড়সহ এক্সক্লুসিভ আইটেমের মালামাল থাকায় আগুনের তেজক্রিয়া বেশি। তবে ফায়ার সার্ভিসের কাজ চলাকালীন পানির সংকট হলে বিস্ফোরণের সম্ভবনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই গোডাউনে বৈদ্যুতিক সংযোগ নেই এবং ভেতরে ঢোকার সুযোগ নেই ফলে এটা ক্রিয়েটিভ (লাগানো) আগুন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানান, হারুন অর-রশিদ নামের এক ব্যক্তি যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার (সম্মিলনী স্কুলের পাশে) আফলা উদ্দিনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিউ যমুনা নামে একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। ওই গোডাউনে শীতের পুরাতন কাপড়ের বেল, বাস-ট্রাকের টায়ার, মবিল, গ্রিস, লুব্রিকেটসহ বিভিন্ন মালামাল থাকে। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই গোডাউনে আগুন দেখতে পেয়ে পাশের সদর পুলিশ ফাঁড়ি ও থানায় খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে তিনটি জেনারেটর দিয়ে পানি উল্লোলন শুরু করে।
ক্ষতিগ্রস্ত নিউ যমুনা ট্রান্সপোর্টের ম্যানেজার রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, উলের তৈরি কাপড়-চোপড়ে আগুন লাগার সম্ভবনা থাকে বলেই ওই গোডাউনে তারা বৈদ্যুতিক লাইন নেয়নি। এছাড়া সন্ধ্যার পর ওই গোডাউনটি খোলা হয়নি। ফলে তাদের ধারণা, শত্রুতামূলক কেউ গোডাউনে আগুন দিয়েছে।
তিনি বলেন, গোডাউনে কোটি টাকার উপরে মালামাল ছিল। যার পুরোটাই আগুনে জ্বলে গেছে।
এদিকে, মাঝরাতে ঘনবসতি আবাসিক লোনঅফিস পাড়ায় আগুন লাগলে লোকজন দিক- বেদিক ছুঁটাছুঁটি শুরু করে। ওই ভবনের পার্শ্ববর্তী ভবনের লোকজন দ্রুত নেমে নিরাপদ আশ্রয়ে নেন। ওই এলাকার সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিএসআই রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম থেকেই আমরা ঘটনাস্থলে থেকে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করছি। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে শুনছি সেখানে প্রচুর পরিমাণ মালামাল ছিল। তিনি আরও বলেন, যদি এটা শত্রুতামূলক হয়ে থাকে তবে পুলিশ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৫