রাঙামাটি: রাঙামাটিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সঙ্গে মেডিকেল কলেজ সমর্থকদের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১০ জানুয়ারি) সকালে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধনের আগে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ জারি থাকবে।
হামলার সূত্রপাতের জন্য পিসিপি এবং মেডিকেল কলেজ সমর্থকরা পরস্পরকে দায়ী করেছেন। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দাবি, তাদের ৯ কর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, রাঙামাটি হাসপাতালে ৮ জন বাঙালি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলায় পিসিপি কর্মীরা ইসলামী ব্যাংক, হ্যাপীর মোড় মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পাল্টা জবাব হিসেবে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরাও শেভরন ক্লিনিক, টেলিটক কাস্টমার কেয়ার ভাঙচুর করে।
রাঙামাটি জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, সম্ভাব্য যেকোন সংঘাত এড়াতে আমরা নির্ধারিত মিছিল বাতিল করেছি, কিছু নেতাকর্মী দল বেঁধে মেডিকেল কলেজে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। এ বিষয়ে পিসিপির সঙ্গে আগেই আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের কথা দিয়েছিল কোনো বাধা দেবে না। কিন্তু তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং বিনা কারণেই ব্যাংক, অফিস ও দোকানপাট ভাঙচুর করেছে, এটা অনাকাঙ্খিত।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রিন্টু চাকমা এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ অবরোধ পালন করছিলাম, এ সময় ছাত্রলীগ এবং বাঙালি ছাত্র পরিষদ বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আমরা প্রতিরোধ করেছি মাত্র। কোনো প্রকার হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। প্রতিপক্ষের হামলায় তাদের ৯ কর্মী আহত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
হামলায় আহতরা হলেন- শ্যামলিন্দু চাকমা (৩০), জ্যোতির্ময় চাকমা (৪৫), দুর্জয় চাকমা (২৫), রিপন চাকমা (২১), সুরেশ চাকমা (২১), মোহনখান দেওয়ান (২৬), কান্তি চাকমা (৪২), ছোট চাকমা (২৮), মনি চাকমা (৪০)। আহতরা বিভিন্নস্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে আহত বাঙালি যারা ভর্তি হয়েছেন তারা হলেন- মনির (৩০), জহির (২৭), জব্বার (৩৫), জামাল (২১), হারুন অর রশীদ (৩১), জাকির হোসেন (৩২), মানিক (২০) এবং হাতেম (২৭)। এরা সবাই পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের গুলতিতে আহত হয়েছেন বলে দাবি আহতদের। আহতদের মধ্যে- জাকির হোসেনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনু সোহেল ইমতিয়াজ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
রাঙামাটির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোস্তফা জামান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৫