রাজশাহী: রাজশাহীতে মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার সারা দেশের মধ্যে এটাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
গত কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে তাপমাত্রা কমছে। বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে ব্যাহত হচ্ছে রাজশাহী মহানগরে বসবাসকারী জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
রাজশাহীতে সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান কমতে থাকায় দ্বিগুণ শীত অনুভূত হচ্ছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, গত ১৭ জানুয়ারি রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ দশমিক ৭ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ১৮ জানুয়ারি ছিল সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি। ১৯ জানুয়ারি সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আর মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে আসে ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা রাজশাহীসহ সারা দেশে চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
তিনি আরও জানান, সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। চলতি মাসের শেষ দিকে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। বয়ে যেতে পারে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, আবহাওয়া অধিদফতরের বরাত দিয়ে জানান এ কর্মকর্তা।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
এদিকে হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাসে কাঁপছে উত্তরের ছিন্নমূল মানুষ। মহানগরীসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে হঠাৎ করে তীব্র শীত জেঁকে বসায় দুর্ভোগ বেড়েছে তাদের। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে শীতে কাতর তারা। পথের ধারে খড়-কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে তাদের। তবে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণও শুরু হয়েছে।
অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগই হৃদরোগ, ডাইরিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন বলে বাংলানিউজকে জানান রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫