ঢাকা: প্রায় দেড় মাস হয়ে গেলেও রোহিঙ্গা মদদদাতা হিসেবে কক্সবাজার-৪ আসনের এমপি আব্দুর রহমান বদিসহ ৫১ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কোনো তদন্ত প্রতিবেদন পায়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ অবস্থায় আরও কড়া চিঠি ইস্যু করেছে কমিশন।
গত ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলা প্রশাসককে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে ইসি। এর আগে কক্সবাজার ও বান্দরবানের মোট ৫১ জনকে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করায় সহায়তাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইসিকে তালিকা পাঠায় প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তালিকায় কক্সবাজারের ৪৬ জনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে খোদ সরকারি দলের এমপি আবদুর রহমান বদির নাম। বান্দরবানে অভিযুক্ত পাঁচ জনের মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাইনুল হকের নামও।
দেড় মাসেও বিষয়টিতে স্থানীয় প্রশাসনের সাড়া না পেয়ে ক্ষুব্ধ নির্বাচন কমিশন।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু জেলা প্রশাসক নয় সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাদেরও একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও তারা কোনো প্রতিবেদন বা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কিছু জানায়নি।
বৃহস্পতিবারে দেওয়া চিঠিতে নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারা।
তাগদা পত্র দিয়েছেন ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারি সচিব মাহফুজা আক্তার। এতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পত্র মোতাবেক অদ্যাবধি কোনো প্রতিবেদন না পাওয়ায় আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে অবশ্যই প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
সংশ্লিষ্ট একটি জেলার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেছেন, একটি বিশেষ কমিটি কাজ করছে, এখনো শেষ হয়নি। তাই কোনো প্রতিবেদন পাঠানো যায়নি।
এবার ইসি নির্দেশনা মেনে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, রোহিঙ্গারা শুধু তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত হয়ে দেশবিরোধী নানা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।
কক্সবাজারে অভিযুক্তদের তালিকায় এমপি বদির ছাড়াও রয়েছে টেকনাফের উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান রফিক উল্লাহ, কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা জিএম রহিমুল্লাহর নাম। এছাড়া বাকি ৪২ জনের মধ্যে রয়েছে ছয় জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, অন্তত দুই ডজন ইউপি সদস্য, ছয় জন পৌর মেয়র বা কাউন্সিলর। বাকিকের মধ্যে রয়েছেন ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, যুবদল নেতা ও চিহ্নিত দালাল।
বান্দরবানের অভিযুক্ত পাঁচ জনের মধ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা ছাড়া বাকি চারজনই স্কুল শিক্ষক যারা তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের চিঠিতে কক্সবাজার জেলায় ৩৮৯ জন রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৪৯ জন রোহিঙ্গাকে বান্দরবান জেলায় ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৫