ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে জিয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতিসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর।
বৃহস্পতিবার (জানুয়ারি ১৫) দিবাগত রাত ২টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় সোয়া ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষ পুলিশের সহায়তায় নিয়ন্ত্রণে আনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার ভোররাত চারটার দিকে ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ বাংলানিউজকে বলেন, আহতদের সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫ জন হবে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জিয়া হল সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে আহত ওই হলের তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর। এদের মধ্যে একজনকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। আহত তিন শিক্ষার্থী হলেন, রুস্তম (দ্বিতীয় বর্ষ), অর্ণব (২য় বর্ষ) এবং জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জহির। সংঘর্ষ চলাকালে মাথায় আঘাত পান জিয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সালমান প্রধান শাওনও। তার মাথায় একাধিক সেলাই লেগেছে বলে জিয়া হল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জসীম উদ্দীন হলের আহতদের মধ্যে রয়েছেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিতু (৪র্থ বর্ষ), বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি সম্পাদক কাউসার আহমেদ (৩য় বর্ষ), মাহমুদ (২য় বর্ষ) প্রমুখ।
এর মধ্যে জিতু ও মাহমুদের আঘাত গুরুতর। জিতুর মাথায় আঘাত থাকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে জসীম উদ্দীন হল সংলগ্ন টং দোকানে খেতে আসেন জিয়া হলের শিক্ষার্থী ইমরান (ইংরেজি, ৪র্থ বর্ষ)। বের হয়ে যাওয়ার পথে তিনি জসীম উদ্দীন হলের সীমানা প্রাচীর ঘেষে প্রস্রাব করেন। তা দেখে প্রতিবাদ করেন জসীম উদ্দীন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রানা হামিদ (বাংলা, মাস্টার্স)। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায় জসীম উদদীন হলের আরও কয়েকজন গিয়ে ইমরানকে মারধর করে।
ইমরানের সাথে থাকা তার দুই বন্ধু হলে খবর দিলে জিয়া হলের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হয়ে জসীম উদ্দীন হলের ওই শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। এরপর জসীম উদ্দীন হলের শিক্ষার্থীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হয়ে জিয়া হলের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে হলের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। এভাবে সোয়া ঘণ্টা ধরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।
খবর পেয়ে প্রক্টর এবং ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ ঘটনাস্থলে আসেন। তবে উভয় পক্ষ থেকে বৃষ্টির মত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ হতে থাকায় তারা এগুতে পারেননি।
এক পর্যায় শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে তাদের সহায়তায় সংঘর্ষ থামান প্রক্টর।
ঘটনা তদন্তে হল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর। তবে এ ঘটনায় কোন মামলা হবে না বলে জানান তিনি।
** ঢাবিতে দুই হলের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ
বাংলাদেশ সময়: ০৩২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫/আপডেট ০৫৩৬ ঘণ্টা