টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান থেকে: দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইজতেমা ময়দানে আসছেন মুসল্লিরা। জুমার নামাজের আর ঘণ্টাখানেক বাকি।
ময়দানে দলে দলে আসছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এদিকে, যারা (মুসল্লিরা) আগে থেকে ছিলেন তারাও প্রস্তুত হচ্ছেন নামাজের জন্য। বেশি সোয়াবের আশায় তারা একত্রে নামাজ পড়বেন। আর এরই মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে ৫০তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।
সরকারি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে ৮৮ দেশের ৪ হাজার ৩ শ’ জন বিদেশি মেহমান এসে পৌঁছেছেন।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো. হারুনর রশিদ বাংলানিউজকে বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের নিরাপত্তায় আগের চেয়ে শক্ত অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মাঠে থাকা বিজিবিও ইজতেমার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য মাঠে থাকা বিজিবি সার্বিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
এদিকে, বিশ্ব ইজতেমায় জুমার নামাজকে সামনে রেখে স্থায়ী-অস্থায়ী মুসল্লিদের ভীড় বাড়ছে। বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে লাখো মুসল্লির সঙ্গে বেশি সোয়াব অর্জনের আশায় জুমার নামাজ আদায়ের জন্য মানুষের ঢল নেমেছে। চিল্লাধারী মুসল্লিদের পাশাপাশি শুধু জুমার নামাজ আদায়ের জন্য অস্থায়ী মুসল্লিরাও আসছেন ময়দানে।
গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মানুষের আগমন বাড়ছে, তাদের বহনকারী যানবাহনের নিরাপত্তায় পুলিশ বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ইজতেমার মুসল্লিবাহী যানবাহনের নিরাপত্তার বিষয়টি অতিরিক্ত নজরে রাখা হচ্ছে।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শুক্রবারের (১৬ জানুয়ারি) এ পর্বে যোগ দিতে ৩৩ জেলার লাখো মুসল্লি ইতোমধ্যে জড়ো হতে শুরু করেছেন ইজতেমা ময়দানে। রোববার (১৮ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।
জানা যায়, দ্বিতীয় পর্বের জন্য বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে ৩৯টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এসব খিত্তায় দেশের ৩৩টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অবস্থান নিয়েছেন।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ময়দানের ১-২ নং খিত্তায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, ৩-৪ নং খিত্তায় ঢাকা, ৫ নং খিত্তায় কক্সবাজার, ৬ নং খিত্তায় মানিকগঞ্জ, ৭ নং খিত্তায় পিরোজপুর, ৮ নং খিত্তায় পটুয়াখালী, ৯/১ ও ৯/২ নং খিত্তায় টাঙ্গাইল, ১০/১ ও১০/২ নং খিত্তায় জামালপুর, ১১ নং খিত্তায় বরিশাল, ১২ নং খিত্তায় নেত্রকোনা, ১৩ নং খিত্তায় কুমিল্লা, ১৪ নং খিত্তায় মেহেরপুর, ১৫ ঝিনাইদহ, ১৬-১৮ নং খিত্তায় ময়মনসিংহ, ১৯ নং খিত্তায় লক্ষ্মীপুর, ২০ নং খিত্তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২১ নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ২২ নং খিত্তায় বগুড়া, ২৩ নং খিত্তায় পঞ্চগড়, ২৪ নং খিত্তায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ২৫ নং খিত্তায় নীলফামারী, ২৬ নং খিত্তায় নোয়াখালী, ২৭ নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও, ২৮ নং খিত্তায় পাবনা, ২৯ নং খিত্তায় নওগাঁ, ৩০-৩১ নং খিত্তায় মুন্সীগঞ্জ, ৩২ নং খিত্তায় মাদারীপুর, ৩৩ নং খিত্তায় গোপালগঞ্জ, ৩৪ নং খিত্তায় সাতক্ষীরা, ৩৫ নং খিত্তায় মাগুরা, ৩৬ নং খিত্তায় কুষ্টিয়া, ৩৭ নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ৩৮ নং খিত্তায় খুলনা ও ৩৯ নং খিত্তায় মৌলভীবাজার জেলার মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন।
এরআগে, গত ৯ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়। ১১ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সেই পর্ব। প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ সা’দ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫
** দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় জড়ো হচ্ছেন মুসল্লিরা
** দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় তিন মুসল্লির মৃত্যু