ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মাসেতু নির্মাণ বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল

মাহমুদ মেনন ও মহিউদ্দিন মাহমুদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
পদ্মাসেতু নির্মাণ বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নাওডোবা পয়েন্ট (জাজিরা) থেকে: পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেকে এগিয়ে এসেও হঠাৎ পিছিয়ে গেছে।



শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নদীশাসনের বাস্তব কাজের উদ্বোধন শেষে শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা পয়েন্টে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

ভাষণের শুরুতেই পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজে যারা ভিটে-মাটি দিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ নির্মাণ কাজে সবার সহযোগিতা কাম্য। এতে এপার-ওপার দুইপারের বাসিন্দারাই সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এটা আমাদের দেশের জন্য নয়, এটি আঞ্চলিক উন্নয়নও হবে।

তিনি বিভিন্ন বাধা-বিপত্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজের প্রকল্প হাতে নিলে বিশ্ব ব্যাংক এগিয়ে আসে। কিন্তু হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়া তারা দুর্নীতির অভিযোগ আনে। যদিও আমরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বিএনপি সরকারের সময়ের দু’টি দুর্নীতির কাগজ দেখায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলকে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যরা সবাই অবহেলার চোখে দেখেছে। আমরা দক্ষিণাঞ্চলে নতুন পোর্ট করেছি, যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। রেলওয়ে যোগাযোগও উন্নত হবে।

বাংলাদেশ একদিন পুরোপুরি স্বাবলম্বী হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও কাছে হাত পেতে নয়। আমরা স্বাবলম্বী হয়ে চলবো। আমরা উৎপাদন করছি। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। বাঙালি কারও কাছে মাথা নত করেনি, করবেও না। বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আজও তা-ই প্রমাণিত হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছি আমরা।

এর আগে, বেলা ১১টা ১৬ মিনিটে নাওডোবায় নবনির্মিত হেলিপ্যাডে এসে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টার থেকে নেমেই মঞ্চের পাশে অবস্থিত একটি ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীশাসনের বাস্তব কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর মোনাজাতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সফলতা কামনা করেন তিনি।
 
ফলক উন্মোচনের পর পাশেই অবস্থিত সুধী সমাবেশের মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বক্তৃতা করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শরীয়তপুর-১ (জাজিরা) আসনের সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ আমাদের ইতিহাসের আরেকটি বীরত্বগাঁথার ঐতিহাসিক দিন। বিজয় দিবসকে সামনে রেখে আজ এই বিজয় দিবসে বাংলার ইতিহাসে আরেকটি সোনালী অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বীর মুজিব দেশ স্বাধীন করেন, ৪৫ বছর পর পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আরেকটি বিজয় অর্জিত হলো। এ যেন বিজয়ের পর আরেকটি বিজয়।

তিনি বলেন, পদ্মাসেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা মনোভাবের সোনালী ফসল।

এসময় পদ্মাসেতু নির্মাণের জন্য যারা নিজেদের ভিটেমাটি দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখতে আশপাশের এবং দূর দূরান্তের এলাকা থেকে কাতারে কাতারে জনগণ এসে ভিড় জমান নাওডোবা পয়েন্টে। শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর এমনকি গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলার দূর দূরান্তের গ্রাম থেকে আসেন তারা।

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে রঙিন ফেস্টুন, পতাকায় সাজে পুরো এলাকা। এসব ব্যানার-ফেস্টুনে দেখা যায় জাতির জনক আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।

জাজিরায় পদ্মাসেতুর নদী শাসনের কাজ উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাবেন পদ্মার ওপারে মাওয়া পয়েন্টে। সেখানে পদ্মাসেতু নির্মাণের পাইলিংয়ের কাজ উদ্বোধন করবেন। সেখানেও তিনি বক্তব্য রাখবেন সমাবেশে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫/আপডেট ১২২৫ ঘণ্টা/আপডেট ১২৫১ ঘণ্টা
এমএ/এইচএ

** ঝড়-ঝাপ্টা পেরিয়ে আমরা পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করেছি
** শত বাধার মুখেও বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে তারা পারে
** গোটা দুনিয়ায় বাংলাদেশ তার সামর্থ্য জানান দিচ্ছে
** পদ্মাসেতু নির্মাণে সবার সহযোগিতা কাম্য

** এ যেন বিজয়ের পর আরেকটি বিজয়

** পদ্মাসেতুর নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
** দেশের নয়, আঞ্চলিক উন্নয়নও হবে
** মঞ্চের চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী
** কোনো কারণ ছাড়াই তারা দুর্নীতির অভিযোগ আনে
** পদ্মাসেতুর নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
** জাজিরায় সুধী সমাবেশ চলছে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।