ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৭ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
১৭ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবস ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কিশোরগঞ্জ: ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আনন্দে সারাদেশ যখন উত্তাল তখনো কিশোরগঞ্জের মাটিতে উড়ছিল পাকিস্তানি পতাকা। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় কিশোরগঞ্জ।

 
 
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আনন্দে সারাদেশ উত্তাল। কিন্তু এদিন বিজয়ের আনন্দ ছিল না কিশোরগঞ্জবাসীর। সেদিনও তাদের মনে ছিল অজানা আতঙ্ক। শহরের নিয়ন্ত্রণ ছিল হানাদার বাহিনীর দোসর এ দেশীয় রাজাকার-আলবদর ও আল শামস বাহিনীর হাতে।  
 
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১২ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ ছেড়ে গেলেও শহরে শক্ত ঘাঁটি তৈরি করে অবস্থান নেয় স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর বাহিনী। তাদের হাত থেকে কিশোরগঞ্জকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন।
 
মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কবীর উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে কিশোরগঞ্জ শহর চারদিক থেকে ঘিরে শক্ত অবস্থান নেয় মুক্তিবাহিনী। ওই দিন গভীর রাতে কবীর উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল করিমগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে সতাল এলাকায় এসে অবস্থান নেন।  
 
অবস্থা বেগতিক দেখে রাজাকার বাহিনীর অধ্যাপক জিয়া উদ্দিন আহমেদ আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের তত্কালীন প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন বলে খবর পাঠান। ১৭ ডিসেম্বর সকালে একটি খোলা জিপে করে মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সশস্ত্র দল সর্ব প্রথম কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে।
 
আরেকটি দল হান্নান মোল্লা, ছাব্বির আহমেদ মানিক, আনোয়ার কামালের নেতৃত্বে শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল দিয়ে কিশোরগঞ্জে প্রবেশ পথে কামালিয়ারচর ও খিলপাড়া এলাকায় আলবদরদের বাধার সম্মুখীন হন। বাধা অতিক্রম করে এ দলটিও কিশোরগঞ্জে প্রবেশ করে।  
 
পরে বিভিন্ন দিক থেকে গেরিলা মুক্তিসেনারা ভারতীয় মিত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন চৌহানের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। শহরের পুরান থানা শহীদি মসজিদ সংলগ্ন ইসলামিয়া ছাত্রাবাস মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর বাহিনী।  
 
এর পরপরই বদলে যায় শহরের চিত্র। বিজয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠে চারপাশ। পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে কিশোরগঞ্জের আকাশে উড়ানো হয় স্বাধীন সার্বভৌম প্রিয় বাংলাদেশের রক্তিম পতাকা। মুক্তিযোদ্ধা, মিত্রবাহিনী আর জনতার উলাস ধ্বনি, আনন্দ উচ্ছ্বাস আর মুক্তির চিরন্তন স্বপ্ন বাস্তবায়নের ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় স্বাধীন কিশোরগঞ্জের মুক্ত আকাশ।  
 
** ফরিদপুরে বিজয়ের সাধ মেলে একদিন পর

বাংলাদেশ সময়: ০৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫    
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।