ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলানিউজকে টিউলিপ

খালার পরামর্শের সুফল পাই

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
খালার পরামর্শের সুফল পাই ছবি: কাশেম হারুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমার খালাকেই রোল মডেল মেনেছি। তাকে সামনে রেখেই এগোচ্ছি।

প্রতিটি বিষয়ে তার সঙ্গে পরামর্শ হয় আমার। আর অদ্ভুত ব্যাপার হলো, খালার পরামর্শের সুফল ব্রিটেনের রাজনীতিতেও পাই আমি –বাংলানিউজকে একথা বলছিলেন ব্রিটিশ সংসদের সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক।
 
বলাই বাহুল্য, তার ‘খালা’ আর কেউ নন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
বাংলাদেশের রাজনীতির তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতৃত্ব শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জ্ঞান ব্রিটেনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও কার্যকর- বলছেন তারই বোনের মেয়ে টিউলিপ।
 
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ঘাতকের বুলেটের আঘাতে সপরিবারে শহীদ হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ভয়াল রাতে দুই মেয়ে ছাড়া নিহত হন পরিবারের সবাই। শেখ পরিবারের কাছের মানুষরা জানেন, বেঁচে থাকা বংশধরদের আগলে রেখেছেন বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে শেখ হাসিনা।
 
নিজের দুই সন্তান- সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকেই শুধু নয়, সন্তান স্নেহ দিয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানাকে। সমান মমতা দিয়েছেন শেখ রেহানার তিন সন্তান, ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিক ববি ও দুই কন্যা- টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিককেও।
 
টিউলিপের কথায় যেন সেই সত্যই আবার প্রকাশ পায়।
 
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিউলিপ। যতবারই কথা বলছিলেন, অকপটে স্বীকার করছিলেন তার জীবনে শেখ হাসিনার অবদানের কথা।
 
খালাকে রোল মডেল ধরে, নানার জীবনীতে উৎসাহিত হয়েই আজকের এই টিউলিপ হয়ে ওঠা। মা-খালার কাছে দেশের গল্প শুনে, মানুষের কল্যাণে তাদের আগ্রহ দেখে রাজনীতিকে ভালোবাসতে শিখেছেন বলেও জানান তিনি।
 
কথায় কিছুটা ইংরেজি টান থাকলেও পরিচ্ছন্ন সুন্দর বাংলায় কথা বলেন পুরো অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলানিউজের সঙ্গে ছোট্ট আলাপে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ বলেন, ছোটবেলায় আমি একেকবার একেক কিছু হতে চাইতাম। খালা বলতেন, তোমার যা হতে মন চায়, তাই হও। মূল কথা, মানুষের কল্যাণ করতে হবে। সেটা যেকোনো ভূমিকায় থেকে করা যায়।
 
টিউলিপ সিদ্দিক যখন এসব বলছিলেন, পেছনে দাঁড়ানো তার ভাই ববি। দু’হাতে বোনকে ধরে রেখেছেন। আলাপের বিষয়বস্তু বুঝতে পেরে সম্মতিসূচক মাথা নাড়েন তিনিও। ১৬ ডিসেম্বর প্যারেড গ্রাউন্ডের আয়োজনে শেখ হাসিনার ঠিক পাশের আসনটিতেই তাকে দেখা গিয়েছিল।
 
কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন টিউলিপের স্বামী ক্রিস পার্সি। অভিব্যক্তি বলছে- তিনিও আলাপের বিষয়বস্তু ধরতে পেরেছেন, খালাশ্বাশুড়ির প্রশংসা চলছে বুঝতে ‍পারছেন তিনি!
 
কথার এক পর্যায়ে আন্তরিক ভঙ্গিতে দু’হাত মেলান টিউলিপ। বলেন, খালার কাছে আমি খুব কৃতজ্ঞ। তিনি সব সময় আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন, বাহবা দিয়েছেন। সঠিক পথ দেখতে সহযোগিতা করেছেন।
 
‘বাংলাদেশের কল্যাণে তিনি (শেখ হাসিনা) খুব উদগ্রিব। সেসবও আমাদের খালা-ভাগনির আলোচনায় আসে। খুব ভালো লাগে তার আধুনিক চিন্তা দেখে। আমি খালাকে নিয়ে গর্ববোধ করি’- বিগলিত আবেগে বলেন টিউলিপ।

নারী-পুরুষ বিবেচনা না করে প্রধানমন্ত্রী পদে দেশপ্রেমী কেউ থাকা জরুরি বলেও মনে করেন বঙ্গবন্ধুর এই নাতনি।

এক প্রশ্নের জবাবে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেই হোক- পুরুষ বা নারী; দেশকে যে ভালোবাসে, গরিবদের যে ভালোবাসে সেটাই জরুরি। দেশকে ভালোবাসে কি না তা দেখতে হবে।

ব্রিটিশ সংসদে ৬৫০ এমপির মধ্যে ১৬০ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি সেখানে বলেছি, সংসদে নারীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে বরং ভালো, প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। এটা নিয়ে আমি গর্বিত।

বাংলাদেশের নারীরা বিভিন্ন শীর্ষস্থানে পৌঁছেছেন দেখে অনুপ্রাণিত হন বলেও জানান টিউলিপ। খালা শেখ হাসিনা এবং মা শেখ রেহানা ছাড়াও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং এভারেস্ট জয়ী ওয়াসফিয়া নাজরীনও তাকে অনুপ্রাণিত করেন বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এসকেএস/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।