ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এটা ছিলো সশব্দ ভূমিকম্প

বিশেষ সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৬
এটা ছিলো সশব্দ ভূমিকম্প ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো বাংলাদেশ। রাজধানীসহ দেশের প্রায় সবগুলো জেলা থেকে ঝাঁকুনি অনূভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।



সোমবার (০৪ জানুয়ারি) ভোর ৫টা ৭ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। ১০ থেকে ১২ সেকেন্ড ধরে কাঁপতে থাকে গোটা দেশ। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) প্রথমে ভূমিকম্পটির মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬.৮ জানালেও এক ঘণ্টা পর সংশোধনী দিয়ে জানায়, কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৭। আর কেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ৩৫১ কিলোমিটার দূরে ভারতের মণিপুর রাজ্যের ইম্ফলে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৫ কিলোমিটার গভীরে।  

ভূমিকম্পের পর থেকে বাংলানিউজে ফোন আসতে থাকে পাঠকদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও খবর ছড়াতে থাকে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোথাও কোনও অঘটনের তখ্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভূমিকম্প যখন আঘাত হানে দেশের অধিকাংশ মানুষ তখন গভীর ঘুমে। প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে আতঙ্কে জেগে ওঠে মানুষ। বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে দ্রুত বাইরে নেমে আসে। অনেকের কাছেই এই কম্পন ছিলো অতীতের ভূ-কম্পনগুলোর চেয়ে বেশি মাত্রায়।

রাজধানীর ইস্কাটনের একটি আবাসিক কম্পাউন্ডের কয়েকশ বাসিন্দাকে দেখা যায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে। তাদেরই একজন জানালেন, ১৪তলা ভবনগুলো এমনভাবে নড়ছিলো যে, ছাদের পানির ট্যাংক থেকে ছলকে পানি পড়ছিলো।

অন্য একজন বললেন, এটা ছিলো সশব্দ ভূমিকম্প। সাধারণত ভূমিকম্পে এমন শব্দ শোনা যায় না।

যারা ঘুমিয়ে ছিলেন, তারা জানালেন, কাঁপুনিতে ঘরের কাঠের আসবাবগুলোতে শব্দ হচ্ছিলো।

রাজধানী ঢাকা ছাড়াও ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভূমিকম্পে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার কথা জানান বাংলানিউজের প্রতিনিধিরা।

ভূমিকম্পের পরপরই জেগে ওঠে গোটা দেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে নানা ধরনের মন্তব্য। তাতে ভূমিকম্পের চিত্র ও এর ফলে সৃষ্ট আতঙ্কের মাত্রা উপলব্দি করা যায়।

ঢাকা থেকে একজন লিখেছেন প্রচণ্ড কাঁপুনিতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। বিছানা কাঁপছিলো, বিল্ডিংটাও কাঁপছিলো। আর সে কম্পন স্থায়ী ছিলো প্রায় ৭ সেকেন্ড।

আরেকজন লিখেছেন, সারা জীবনে ভূমিকম্পে এত কম্পন আর দেখিনি। সাত তলা ভবনের তিন তলায় ছিলাম। ভবনটা পূর্ব-পশ্চিম হয়ে দুলছিলো। সবাই দৌড়ে বের হয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ছেলেটা ঘুমাচ্ছিলো তাই সম্ভব হয়নি।

আরেকজন লিখেছেন, এমন আতঙ্ক আর কোনও ভূমিকম্পেই বোধ করিনি।

অন্যজন লিখেছেন, আমার জীবনে এত জোরে কাপুনি আর দেখিনি।

সিলেট থেকে একজন লিখেছেন, বিছানা, টেবিল, চেয়ার সবকিছুই কাঁপছিলো। ফ্যান কাঁপছিলো, টিউব লাইটেও ঝাঁকি লাগছিলো। ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম, বিষ্মিতও হয়ে পড়ি। এই স্মৃতি কখনোই ভুলবো না।

যশোর থেকে একজন লিখেছেন, ভীষণ কাঁপুনিতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ভাবলাম কেউ বুঝি আমার খাটটি নাড়াচ্ছে। ভুত নাকি! ভীষণ ভয় পেয়ে গেছি।

ঢাকা থেকে আরো একজন লিখেছেন, ঘুমিয়ে ছিলাম, নড়ানড়িতে ঘুম ভেঙ্গে গেছে।

আরেকজন লিখেছেন, আমি আমার ল্যাপটপের সামনে বসেছিলাম। হঠাৎ শব্দ কানে আসলো, আর ঝাঁকুনি। দ্রুত স্ত্রীকে ডেকে তুললাম আর বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। ভীষণ ভয় পেয়ে যাই কারণ আমাদের বাসা একটি ভবনে তৃতীয় তলায়। কাঁপুনি থামলেও ভয় কাটলো না। কারণ আফটারশক আসতে পারে। দ্রুত আত্মীয়স্বজনকে ফোন করে তাদের খবর নিলাম। তাদেরও সবার একই আতঙ্ক।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৬
আরএইচ/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।