ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশি কূটনীতিককে ফেরত নিতে বলছে পাকিস্তান

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
বাংলাদেশি কূটনীতিককে ফেরত নিতে বলছে পাকিস্তান

ঢাকা: এবার ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের এক নারী কূটনীতিককে ফেরত আনতে অনুরোধ জানিয়েছে পাকিস্তান।

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বাংলাদেশে পাকিস্তানি কূটনীতিকদের জঙ্গি সম্পৃক্ততা নিয়ে দুই দেশের অব্যাহত টানাপোড়েনের মধ্যে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) মৌসুমী রহমানকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশকে অনুরোধ জানায়।



মঙ্গলবার (০৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশের হাইকমিশনার সোহরাব হোসেনকে তলব করে এ অনুরোধ জানায় ইসলামাবাদ। সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র বলছে, পাকিস্তান সরকার গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে পাকিস্তান হাইকমিশনের দ্বিতীয় সচিব ফারিনা আরশাদকে প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশি নারী কূটনীতিককে প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায় একাত্তরে গণহত্যা চালানো ‌ দেশটি।

ফারিনা আরশাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার সুস্পষ্ট অভিযোগ ওঠায় তাকে ফিরিয়ে নিতে সে দেশকে অনুরোধ করেছিল বাংলাদেশ সরকার।

প্রায় এক বছর ধরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের নজরে ছিলেন ফারিনা আরশাদ। তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার পর অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করে ইসলামাবাদ।
কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ বা কারণ ছাড়াই বাংলাদেশি কূটনীতিক মৌসুমী রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে পারেনি পাকিস্তান।

‘প্রতিশোধ পরায়ন’ হয়েই পাকিস্তান এ কাজ করেছে বলে দাবি করছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

সূত্রগুলো বলছে, পাকিস্তানি কূটনীতিকের জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টি ভিন্ন রূপ দিতে ও কূটনৈতিক টানাপড়েনকে আরেও তীব্র করতেই পাকিস্তান এ কাজ করছে।
পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সোহরাব হোসেন মঙ্গলবার ইসলামাবাদের এই অবস্থানের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন।  
এর আগে ফারিনা আরশাদ ইস্যুতে বাংলাদেশি হাইকমিশনারকে দুই দফা তলব করে পাকিস্তান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মৌসুমী রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবে না বাংলাদেশ সরকার। ইতোমধ্যে তাকে পর্তুগালে বাংলাদেশ মিশনে বদলি করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা শেষ হওয়ার আগেই তিনি লিসবনের উদ্দেশ্যে ইসলামাবাদ ছাড়বেন।

যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপোড়েনের সময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার সোহরাব হোসেন ছুটিতে ঢাকায় ছিলেন।
সে সময় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মৌসুমী রহমান। তলবের জবাবে ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হিসেবে তিনি দুই দফায় পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

এদিকে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাইকমিশনার সোহরাব হোসেনও শিগগিরই ইসলামাবাদ থেকে ঢাকায় ফিরছেন। আগামী জুলাই মাসে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই সরকার তাকে ফিরিয়ে আনছে।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে একাত্তরে হানাদার বাহিনীর বাংলাদেশি দোসরদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও দণ্ডকার্যকরে বারবার বিচলিত হয়েছে পাকিস্তান।
এরই মধ্যে বাংলাদেশে জোরদার হচ্ছে ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবি।

বুধবার (০৬ জানুয়ারি) হানাদারদের আরেক দোসর জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
আর এর ঠিক একদিন আগে বাংলাদেশি কূটনীতিককে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানালো ইসলামাবাদ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৫
জেপি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।