ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঝুঁকিপূর্ণই ছিল ভবনটি, হারিয়ে গেছে নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্যও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৬
ঝুঁকিপূর্ণই ছিল ভবনটি, হারিয়ে গেছে নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্যও ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে হেলে পড়া ভবনটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ভবনের প্রতিটি কক্ষের জরাজীর্ণ অবস্থা।

দেয়াল থেকে খসে পড়ছে প্লাস্টার। সিলিং থেকেও প্লাস্টার খসে বের হয়ে গেছে ভেতরের রড।

শনিবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে ভবন হেলে পড়ার পরে এমন বর্ণনাই দিলেন বাড়ির ভাড়াটিয়ারা। একই অভিযোগ প্রতিবেশীদেরও।

তাদের অভিযোগ, হেলে পড়া এই ভবনটি পাকিস্তান আমল নির্মাণ করা হয়। প্রথমে দোতলা ভবন থাকলেও পরে পুরাতন ভবনের ওপর নতুন করে গেঁথে চার তলা করা হয়। কেবল তাই নয়, ভাড়া দিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় ছাদে টিন দিয়ে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে কয়েকটি রুম।

এসব কাজে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে অনুমোদন নেওয়া হয়নি-এমন সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা।

শনিবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার তাজমহল রোডের সি ব্লকের ১৯/৪ চারতলা ভবন হেলে পড়ে। নিরাপত্তাজনিত কারণে ভবনের সবাইকে বের করে দিয়ে সিলগালা করে দেয় রাজউক।

রাজউকের অথরাইজড অফিসার ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শুধু সিলগালা নয়, বুয়েট বিশেষজ্ঞদের জানানো হয়েছে, তারা আসার পরেই ভবন ভাঙা, সংস্কার কিংবা বসবাসের সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

ভবনটি নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে ভবনটি অনেক আগে তৈরি। আমরা ধারণা করছি, পাকিস্তান আমলেই এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে নথিপত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হেলে পড়া ভবনে দুই বছর ভাড়া ছিলেন। গত তিন মাস যাবৎ তিনি মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া আছেন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, এই ভবনের ভেতরে অবস্থা করুণ। আমি যখন ছিলাম তখন দেখেছি, সিলিংয়ের প্লাস্টার খসে খসে পড়তো। পাশের দেওয়ালগুলো অবস্থাও খুব ভালো ছিল না।

মালিক ভাড়া বেশি নিতেন কিন্তু ভবনের উন্নয়নের কোনো কাজ করেননি, যোগ করেন তিনি।

ভবনের ভাড়াটিয়া ফারুক বাংলানিউজকে জানান, ভবনের রুমগুলো খুব খারাপ কিন্তু ভাড়া অনেক বেশি। আর এখানে বেশির ভাগই অবিবাহিতরা বসবাস করেন।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স’র উপ সহকারী পরিচালক মাসুদ হোসেন জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি এই ভবনটি হেলে পড়ে পাশের ছয়তলা একটি ভবনের গায়ে লেগে আছে। পর্যবেক্ষণ করে রাজউক, বিদ্যুত, তিতাস, ও বুয়েটের ইঞ্জিনিয়াদের অবহিত করা হয়েছে। তারা এসে ভবনটি দেখে সিদ্ধান্ত দিলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হেলে পড়া ভবনটির পাশের ছয়তলা ভবনের নির্মাণ প্রকৌশলী মো. শফিকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, হেলে পড়া ভবনের বিষয়ে বলতে পারি না, এই ভবনের যখন নির্মাণ কাজ চলছিল তখন হেলে পড়া ভবনের পাশের মাটি কিছুটা নরম ছিল। আমরা পাইলিং মাটি ফেলে কাজ করেছি, যেন এই ভবনের কোনো ক্ষতি না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৬
এসজেএ/এটি

** মোহাম্মদপুরের হেলে পড়া ভবন সিলগালা করছে রাজউক
** রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চারতলা ভবন হেলে পড়েছে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।