ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে থমথমে পরিস্থিতি

ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৬
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে থমথমে পরিস্থিতি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে: তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে এক মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সড়কগুলোতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।



শহরের সব দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণস্থানগুলোতে র‌্যাব-পুলিশ ও বিজিবি  মোতায়েন রয়েছে।

এদিকে, দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার এএসপি তাপস রঞ্জন সাহা ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে মঙ্গলবার(১২ জানুয়ারি) বিকেলে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনার তদন্তে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম। তদন্ত টিমের প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহবুবুর রহমানকে।

মঙ্গলবার দুপুরের পর শহর জুড়ে বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। বিকেলে কয়েকটি সড়কে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে আগামীকালের হরতালের সমর্থনে হাতে লাঠি ও রড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রধান সড়কটি এ রোডসহ কান্দিপাড়া, ফকিরাপুল এলাকার সব দোকানপাট, হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শহরের এসব এলাকা এখন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া বিভিন্ন মোড়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরও উপস্থিতি রয়েছে। যেকোনো সময় আবার সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে আর অবনতি না ঘটে, সেজন্য শহরের ফকিরাপুল ব্রিজে র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া শহর জুড়ে টহল দিচ্ছে ৪ প্লাটুন বিজিবি।

বিকেলে আছরের নামাজের পর কাজীপাড়া ঈদগাহ মাঠে নিহত মাদ্রাসা ছাত্র মাসুদুর রহমানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নবীনগরে তার গ্রামের বাড়িতে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর। মঙ্গলবার(১২ জানুয়ারি) ভোরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমানের মৃত্যুর পর শহরের অবস্থা আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে শহরের ফকিরাপুল, টি এ রোড, কান্দিপাড়া এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

দুপুরের পর লাশ সদর হাসপাতাল থেকে দেওয়া হবে না এ গুঞ্জনে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সদর হাসপাতাল, ব্যাংক এশিয়াসহ বিভিন্ন দোকানপাট ভাঙচুর করে। বিকেল ৪টায় পুলিশের পিকআপভ্যানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সকালে দু’দফায় রেলওয়ে স্টেশনের সিগন্যাল, টিকেট কাউন্টার, স্টেশন মাস্টারের কক্ষ, দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।

ফকিরাপুল এলাকায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি পিকআপভ্যানে অগ্নিসংযোগ করে।

সদরের জেলা পরিষদ মার্কেটের একটি মোবাইল টেলিকম দোকানে(ছাত্রলীগ নেতার আত্মীয়ের দোকান) এক মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সঙ্গে ওই দোকানের মালিকের বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে মারপিট করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনা বড় আকার ধারণ করে।

পরবর্তীতে ছাত্রলীগ, কান্দিপাড়া জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণে চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রায় ৩০ জন আহত হন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) ভোরে মাদ্রাসা ছাত্র মাসুদুর রহমান অবস্থায় মারা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৬
পিসি

** রেল স্টেশনে তাণ্ডব, এমপির কার্যালয় ভাঙচুর
** ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজিবি মোতায়েন
** ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম-সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
** ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে নিহত ১, বিজিবি মোতায়েন
** ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত
** ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংঘর্ষ ৪ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।