ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

'ভ্রমর বসেছে ফুলে'

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
'ভ্রমর বসেছে ফুলে' ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: দর্শনার্থীদের পদচারণায় জমে উঠেছে রাজশাহীর তিন দিনব্যাপী পুষ্পমেলা। নানান রঙ আর জাতের ফুলের মৌ মৌ গন্ধে সুগন্ধিত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গন।

ফুলের সেই নিষ্পাপ সৌরভে মন মাতিয়ে তুলতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় জমাচ্ছেন তরুণ-তরুণী ও কচিকাঁচা শিশুরা।

কেউ দেখতে, কেউ কিনতে হাজির হচ্ছেন বাহারি ফুলের হাটে। কেউ বা রঙিন ফুলের বাগানে দাঁড়িয়ে শখের বসে হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোন দিয়ে তুলছেন নানান অ্যাঙ্গেলের সেলফি।

তিন দিনব্যাপী ১০ম পুষ্পমেলা শুরু হয়েছে শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে। দ্বিতীয় দিন বিকেলেই মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে জমে ওঠার এমন মনকাড়া দৃশ্য।

পুষ্পমেলার বিভিন্ন দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, হরেক রকমের দেশি-বিদেশি ফুল ও ফুলগাছের সমাহার। চোখ ধাঁধানো স্টার, গ্যাজানিয়া, গাদা, গোলাপ, ডালিয়া, জারবেরা, ক্রিজিয়াম, সালেসিয়া, ছলি ক্রিজিয়াম, ইফোরভিয়াসহ নানা প্রজাতির ফুলের গাছ রয়েছে সেখানে। এগুলোর কোনো কোনোটির দাম ২০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে।

পুষ্পমেলার আয়োজক সংগঠন রাজশাহীর বৈকালী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন আহমেদ বাবু বলেন, আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশীয় ফুলের সঙ্গে বিদেশি জাতের নানা ফুল এখন দেশের উচ্চবিত্ত মানুষের বাগান ও ঘর-বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শোভা পায়। নানা রঙ, গন্ধ ও জাতের ফুল পুষ্পপ্রেমীদের মনে বাড়তি আনন্দের খোরাক যোগায়।

নামি-দামি অনেক ফুল সাধারণ মানুষের চোখে খুব একটা পড়ে না। তাই তারা এক সঙ্গে এতো ফুলের সোন্দর্য উপভোগ করতেও পারেন না। তা বিবেচনা করেই রাজশাহীতে প্রতি বছর বৈকালী সংঘ এ ব্যতিক্রমী আয়োজন করে আসছে।

এ মেলা মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে বলেও জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন আহমেদ বাবু।

পুষ্পমেলায় অংশ নেওয়া গ্রিন অ্যাপেক্স নামের একটি নার্সারির দোকানে পুরো অংশ বিদেশি নানা ফুলের সমাহারে ঠাসা। ফুল আর ফুলের গাছে সাজানো দোকানে সামনে দর্শনার্থীদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো।

গ্রিন অ্যাপেক্স দোকানের মালিক মাসুম হোসেন বলেন, তার দোকানে সবগুলোই বিদেশি ফুলের গাছ। এর মধ্যে কোনো কোনোটির দাম ৪-৬ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। তবে কেবল ফুল বিক্রি করাই তার মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হলো ফুল সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ আরও বেশি করে জাগিয়ে তোলা এবং ফুলকে চেনানো। আর শহুরে জীবনের গণ্ডি পেরিয়ে সামান্য সময়ের জন্য সব বয়সের মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও আনন্দ বিলিয়ে দেওয়া।

পুষ্পমেলায় আসা রাজশাহী কলেজের ছাত্রী পাপিয়া জাহান বলেন, এবারই প্রথম তিনি পুষ্পমেলায় এসেছেন। তবে মেলায় এসে যে এতো ভালো লাগবে, তা আগে ভাবতে পারেননি তিনি। নানা প্রজাতির ফুল একসঙ্গে দেখতে পেয়ে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। এমন নির্মল আনন্দ অনেক দিন উপভোগ করেননি তিনি।

রাজশাহী মহানগরীর কাজিহাটা মনিবাজার চত্বরের ওয়ান ব্যাংকের সহযোগিতায় এ মেলার আয়োজন করেছে বৈকালী সংঘ। এবারের পুষ্পমেলায় বিভিন্ন ফুলের ১৮টি দোকান স্থান পেয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পুষ্পমেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকছে।

মেলা চলবে রোববার (১৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত। তিন দিনব্যাপী পুষ্পমেলায় রয়েছে শিশুদের চিত্রাংকন, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনা।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
এসএস/ওএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।