ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর তোপের মুখে পড়েছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্মকর্তারা। অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে চলতি বোরো মৌসুমে উৎপাদনের ভুল তথ্য দেওয়ায় মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষিতথ্য পরিবেশন নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবং পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে এক সমন্বয় সভায় মন্ত্রী ব্যুরোর ভুল তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিবিএসের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের এ ভুল তথ্যের কারণে আমাদের সব চেষ্টা, পরিকল্পনা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এ পরিসংখ্যানের দেওয়া তথ্য দেখে মনে হয় যেন সার, ডিজেল ও বিদ্যুতে সরকারের দেওয়া ভর্তুকি কৃষকদের কোনো কাজেই আসেনি। ”
বিবিএসের বিরুদ্ধে মনগড়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, “যারা কৃষিতে প্রাণোদনা দেওয়ার বিরোধী এ পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে বিবিএসের আঁতাত রয়েছে সেটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিবিএস আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই এ তথ্য দিয়েছে। ”
ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য বিবিএসকে গণমাধ্যমসহ জাতির কাছে মা চাইতেও বলেন কৃষিমন্ত্রী।
মন্ত্রীর তোপের মুখে বিবিএস কর্মকর্তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, অন্যান্য সংস্থার তথ্য সংগ্রহের মধ্যে পদ্ধতিগত ভিন্নতা আছে। তাই তথ্যের হেরফের হয়। লোকবল সংকট এবং কৃষিতথ্য সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কথা তুলে ধরেন তারা। সমন্বয়ের চেষ্টা না করে ভুল করেছেন বলেও সভায় স্বীকার করেন বিবিএসের কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, সরকার এ বছর বোরো উৎপাদনের ল্যমাত্র নির্ধারণ করেছে এক কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। বোরো চাষ হয়েছে ৪৮ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে। হাওড় এলাকায় ৫০ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে অকালবন্যায় তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় দুই লাখ মেট্রিকটন উৎপাদন কম হলেও অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর বোরোর ফলন বরং ভালই হবে। এবার ল্যমাত্রাও পূরণ হবে বলে দাবি করছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ।
কিন্তু পরিসংখ্যান ব্যুরো গত ১৩ মে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপিত তথ্যে সম্ভাব্য উৎপাদন দেখিয়েছে মাত্র এক কোটি ৭৪ লাখ মেট্রিক টন। অথচ তখন পর্যন্ত তখন বোরো ধানের ৫০ ভাগও কাটা হয়নি। এ ছাড়া এর ওপর ভিত্তি করে তারা ২০০৯-১০ অর্থ বছরে কৃষি েেত্র প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করেছে দুই দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে এ হার ছিলো ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ।
সভায় কৃষিসচিব সি কিউ কে মোসতাক আহমেদ, বীজ উইংয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আনোয়ার ফারুক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাঈদ আলী, স্পারসোর চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, বিএআরসি’র ওয়ায়েস কবির, বিবিএস’র মহাপরিচালক শাহজাহান আলী মোল্লা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আবদুল মান্নানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের সময়: ১৭৫৪ ঘন্টা, ১জুন’ ২০১০ইং
ইউবি/বিকে/জেএম