ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিজয়ের ৪৫ বছর পর বাঘারপাড়ায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
বিজয়ের ৪৫ বছর পর বাঘারপাড়ায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মুক্তিযুদ্ধে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় শহীদ হয়েছেন এক হাজার ৪৮৪ জন। এই শহীদদের স্মরণে সরকারি উদ্যোগে এতদিন কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি।

যশোর: মুক্তিযুদ্ধে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় শহীদ হয়েছেন এক হাজার ৪৮৪ জন। এই শহীদদের স্মরণে সরকারি উদ্যোগে এতদিন কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি।

উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি ছিল একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের। অথচ বার বারই উপেক্ষিত হয়েছে সেই দাবি।

অবশেষে বিজয়ের ৪৫ বছর যশোর-৪ (বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় মুক্তিযোদ্ধাদের ইচ্ছা পূরণ করলেন। তার ব্যক্তি উদ্যোগে চিত্রা নদীর পাড়ে নির্মাণ করা হলো ‘স্বাধীনতা চত্বর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ’।

স্বাধীনতার ৪৬তম বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর ২০১৬) স্বাধীনচিত্তে সেই স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ।

সকালে এই স্বাধীনতা চত্বরে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা ডা. চিত্তরঞ্জন রায় অনেকটা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা বাঘারপাড়ার মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলার শিকার। এমনকি আমাদের বসার জন্য কোনো অফিসও ছিল না। কিছু দিন আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় নিজের খরচে মুক্তিযোদ্ধাদের বসার জন্য একটি অফিস করে দিয়েছেন। অফিস পরিচালনার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে ব্যক্তিগতভাবে ৫ লাখ টাকার একটি এফডিআর করে দিয়েছেন। সেখান থেকে প্রতিমাসের লাভের টাকা তুলে আমরা অফিস খরচ বহন করি। এছাড়াও খাজুরায় মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট করেছেন এমপি রণজিত।

বাঘারপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার হাসান আলী বাংলানিউজকে বলেন, পুরো বাঘারপাড়ায় স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে এক হাজার ৪৮৪ জন শহীদ হন। এসব শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আমাদের কোনো স্মৃতিস্তম্ভ ছিল না। ১৯৮১ সালের পরে বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন আমরা তার কাছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে দেওয়া দাবি করেছিলাম। তিনি তখন উপজেলা পরিষদের মধ্যেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি ‘অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণ করে দেন। আর রণজিত কুমার রায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে আমরা তার কাছে একটি ‘স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি করি। তিনি আমাদের দাবি পূরণ করেছেন।

বাঘারপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দপ্তর সম্পাদক বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্থানীয় রাজাকাররা আমাদের সহযোদ্ধা ও সহযোগীদের হত্যা করে যে নদীতে ফেলে দিতো সেখানেই এই স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে।

বাঘারপাড়ার মুক্তিযোদ্ধ শরীফ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আগে একটি গণ্ডির মধ্যে আমাদের আত্মার আত্মীয়দের শ্রদ্ধা জানাতাম। মৃত্যুর আগে এমন একটি উন্মুক্ত স্থানে স্থায়ীভাবে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে ভাবতেও পারিনি।

জানতে চাইলে যশোর-৪ (বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে আগে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্যই সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি পূরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক জীবনে তৃণমূলের রাজনীতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পরে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। প্রত্যেক নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মনোনয়ন ও সমর্থন পেয়েছি বলেই জনগণ আমাকে কাছে টেনে নিয়ে নির্বাচিত করেছেন।

এজন্য আজীবন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি হয়ে জনগণের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে থাকবেন বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
পিসি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।