ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মিত্রবাহিনীর নায়কদের মুখে যুদ্ধ জয়ের গল্প

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬
মিত্রবাহিনীর নায়কদের মুখে যুদ্ধ জয়ের গল্প ছবি: জিএম মুজিবুর

বুকে বুলেটবিদ্ধ হয়ে আমি হাসপাতালে, তখন জ্ঞান ছিল না, জয়বাংলা, জয় মুজিব, জয় ইন্দিরা- এমন স্লোগানে হঠাৎ ঘুম ভাঙলো ১৭ ডিসেম্বর সকালে। তখন জানতে পারলাম বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, হাসপাতালে কাতারে কাতারে বাঙালি আমাদের দেখতে এলো।

ঢাকা: ‘বুকে বুলেটবিদ্ধ হয়ে আমি হাসপাতালে, তখন জ্ঞান ছিল না, জয়বাংলা, জয় মুজিব, জয় ইন্দিরা- এমন স্লোগানে হঠাৎ ঘুম ভাঙলো ১৭ ডিসেম্বর সকালে। তখন জানতে পারলাম বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, হাসপাতালে কাতারে কাতারে বাঙালি আমাদের দেখতে এলো।

সেই দিনের স্মৃতি এখনও চোখের সামনে স্পষ্ট। ’

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্য লেফটেন্যান্ট শুভেশ কুমার মিত্র একাত্তরের যুদ্ধের বিভীষিকাময় এক দিনের এমন গল্প শোনালেন ঢাকায় বসে।

ভারতের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জি এস সিহতার নেতৃত্বে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় প্রতিনিধি দলের একজন শুভেশ মিত্র।

স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া ভারতের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিএস সিহতার নেতৃত্বে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্যরা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সরকারের আমন্ত্রণে এসেছেন বাংলদেশে।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর র‌্যাডিসন হোটেলে বসে মিত্রবাহিনীর সদস্যরা সাংবাদিকদের বলছিলেন সেই সময়ের অপারেশনগুলোর গল্প। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা।

‘কিলো ফাইট’ এবং অপারেশন জ্যাকপটের গল্প বলছিলেন মিত্র বাহিনীর সদস্যরা।

শুভেশ মিত্র বঙ্গোপসাগরে ‘হটপ্যানস’ নামের একটি অপারেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, পাক বাহিনীর জাহাজ আসার পথে সাগরে মাইন ফেলে রেখেছিলেন তারা। ওই সময়েই শত্রু বাহিনীর গুলি লাগে তার বুকে, হাতে। পরে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনার হাসপাতালে। বাংলাদেশে এসে সেই গল্প বলছিলেন গর্ব করে।

সম্মিলিত যুদ্ধ করে বাংলাদেশের ৪৫ বছরে যে উন্নতি হয়েছে তার প্রশংসা করেন মিত্র বাহিনীর নায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিএস সিহতা। বলছিলেন, বাংলাদেশ ও ভারত একসাথে অনেক কাজ করছে, করতে পারে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করে সিহতা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার যা করছে, তা অনন্য।

স্বাধীনতার ৪৫ বছরে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর যে উন্নতি হয়েছে তার প্রশংসাও করেন সিহতা।

আগের দিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনায় দুই দেশের ভিশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সিহতা বলেন, দুই দেশ একসঙ্গে আরও কাজ করতে পারে, বাংলাদেশের সে সুযোগ অবারিত।

ভারতের সাবেক এয়ার কমান্ড্যান্ট চন্দ্র মোহন সিংলা ‘অপারেশন কিলো ফাইট’ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, আমার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই। দুটি ডিসি-৩ ডাকোটা এবং একটি অ্যালুয়েট-৩ হেলিকপ্টার নিয়ে যুদ্ধে নামেন বিমান বাহিনীর সদস্যরা।

ডাকোটা মাটিতে হামলার জন্য অতটা সক্ষম না থাকলেও তা দিয়ে হামলা করা হয়েছে বলে জানান সিংলা।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠন এবং এর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ায় বিশেষ ভূমিকা পালনকারী সিংলা আগরতলা সীমান্ত থেকে সিলেট পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অভিযানের কথা স্মরণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আসামের দিমাপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী যাত্রা শুরু করেছিল।

‘অপারেশন জ্যাকপট’ নিয়ে গল্প বলেন কমান্ডর ভিজে কপিল। এছাড়াও প্রতিক্রিয়া জানান এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ।

মিত্রবহনীর সদস্যদের বিজয়ের দিন সংবর্ধনা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সে কথাও স্মরণ করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।