ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দুর্নীতির দায়ে এবার এনবিআরের তিন কর্মকর্তাকে ‘পদাবনতি’

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
দুর্নীতির দায়ে এবার এনবিআরের তিন কর্মকর্তাকে ‘পদাবনতি’

বর্তমান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুর্নীতি, হয়রানি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ করেছে। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ঢাকা: বর্তমান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুর্নীতি, হয়রানি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ করেছে। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।

 

সৎ, কর্মকর্তাদের ভালো জায়গায় পদায়ন, পুরস্কার প্রদান ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইতোমধ্যে অনেক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
 
অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এর মাধ্যমে অসৎ কর্মকর্তাদের স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে এনবিআর।

চাকরিচ্যুতির পর দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কর কমিশনারসহ তিন কর্মকর্তাকে নিম্ন পদে পদাবনত করা হয়েছে।
 
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) কর অঞ্চল রংপুর এর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের দায়ে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তিন কর্মকর্তাকে পদাবনত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এনবিআর।
 
তিনজন হলেন- রংপুর কর কমিশনার অনিমেষ রায় (বর্তমানে সদস্য, ট্যাক্সসেস আপিলাত ট্রাইব্যুনাল, দ্বৈত বেঞ্চ, খুলনা), অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. রিয়াজুল ইসলাম (বর্তমানে অতিরিক্ত কর কমিশনার, খুলনা কর অঞ্চল) ও উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ আমিরুল করিম মুন্সী (বর্তমানে উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৬, ঢাকা)।
 
পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কর কমিশনার অনিমেষ রায় রংপুর কর অঞ্চলের কমিশনার থাকাবস্থায় ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় অভিযোগ উঠায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
 
মামলা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত শেষে এর সত্যতা খুঁজে পায় কমিটি। পরে কমিটি পদাবনতির দণ্ড প্রদানে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মতামত চায়।
 
পরে গত ১৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি পদাবনত দণ্ডের অনুমোদন দেন। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
 
একই দিন একইভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রংপুর কর অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. রিয়াজুল ইসলাম ও উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ আমিরুল করিম মুন্সীকে একই দণ্ড দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
 
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত শাস্তি অনুসারে তিনজন কর্মকর্তাকে তাদের পদ থেকে পদাবনত (নিম্ন পদ) করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু করেছে এনবিআর।

 
এনবিআর সূত্র জানায়, সর্বোচ্চ করদাতা মনোনয়নে দুর্নীতির অভিযোগে গত ৯ অক্টোবর সহকারী কর কমিশনার সফি-উল-আলম নামে এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
 
তিনি সুনামগঞ্জ সার্কেলে কর্মরত থাকা অবস্থায় ২০১০-১১ করবর্ষে সর্বোচ্চ করদাতা মনোনয়নে দুর্নীতির আশ্রয় নেন। এছাড়া  দুর্নীতির অভিযোগে কাস্টমস কমিশনার এম হাফিজুর রহমান, সহকারী কর কমিশনার জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা কর পরিদর্শন পরিদফতরের উপ-পরিচালক বিদ্যুৎ নারায়ণ সরকারসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত ও শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
 
সূত্র আরো জানায়, ২১ ডিসেম্বর থেকে মাসব্যাপী রাজস্ব ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। এর আওতায় শুধু রাজস্ব ফাঁকিবাজই নয়, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও জোরালোভাবে কাজ শুরু হয়েছে।
 
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, জিরো টলারেন্স নীতির কারণে এনবিআর কর্মকর্তারা রং বদলাতে শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে আমরা কঠোর বার্তা দিতে চাই যে, দুর্নীতি ও হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
আরইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।