গত বেশ কিছুদিন ধরে এই অঞ্চলকে ঘিরে অনুভূত হওয়া মৃদু থেকে মাঝারি কম্পনগুলোর মধ্যে মঙ্গলবারের এই কম্পন সর্বশেষ সংযোজন। ভ
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিলো বাংলাদেশ ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন আম্বাসা ও কুমারঘাটের মধ্যবর্তী লংতরাই পার্বত্যরেঞ্জে।
এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও ঢাকাসহ সারাদেশে এই ভূমিকম্প ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়।
এই প্রথম ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে রিখটার স্কেলে ৫ মাত্রার থেকে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প উৎপন্ন হলো।
বিষয়টি বাংলাদেশের জন্যেও যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। ধারণা করা হচ্ছে, এসব মৃদু কম্পন হলো ভবিষ্যতের শক্তিশালী ভূমিকম্পের লক্ষ্মন। যে ভূমিকম্পে এ জনপদের ওপর নেমে আসতে ভয়াবহ বিপর্যয়।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বাংলাদেশকে ঘিরে এমনই এক প্রবল ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিয়েছেন।
তারা বলেছিলেন, ভূগর্ভের গভীরের স্তর যাকে বলা হয় টেকটোনিক প্লেট তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হতে পারে। পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই এই প্লেটগুলো একটি অপরটির সঙ্গে সেধিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বা ধাক্কা দেয়। যে জায়গাগুলোতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে সেগুলোকে সাবসনিক জোন বলা হয়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এ রকমই দুটি টেকটোনিক প্লেটের সাবসনিক জোন রয়েছে বাংলাদেশ ঘিরে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ভারত এবং ভারত মহাসাগরীয় এলাকা নিয়ে গঠিত একটি টেকটোনিক প্লেট কোটি কোটি বছর ধরে ক্রমাগত একটু একটু করে ধাক্কা দিয়ে চলেছে এশিয়ান প্লেটকে।
আর এই ধাক্কার ক্ষেত্র বা সাবসনিক জোনের ক্ষেত্র বাংলাদেশ সংলগ্ন ভূগর্ভে। একটু একটু করে শক্তি সঞ্চয় করছে ভূমিকম্প। যা যে কোনো মুহূর্তে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন পৃথিবীর এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড়বড় প্রায় সব ভূমিকম্পই সংঘটিত হয়েছে সাবসনিক জোনকে ঘিরে। পৃথিবীর প্রায় সবগুলো সাবসনিক জোনই মহাসাগরগুলোর নিচে অবস্থিত।
তবে বাংলাদেশকে ঘিরে যে সাবসনিক জোনটি অবস্থিত তা সম্পূর্ণভাবে মাটির নিচে। তাই এক্ষেত্রে ঝুঁকি বা সম্ভাব্য বিপর্যয়ের মাত্রাও অনেক বেশি বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।
এর আগে ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের ইন্দোনেশিয়ার কাছাকাছি অবস্থিত এ রকমই একটি সাবসনিক জোনে সমুদ্রের নিচে ভূমিকম্পের ঘটনায় ব্যাপক সুনামির সৃষ্টি হয়েছিলো। যে ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলো ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৬
আরআই