চলতি বছর আগাম জাতের আলু চাষে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার উৎপাদন হয়েছে। আলু খেত দেখে কৃষকের প্রাণ জুড়ালেও কষ্টার্জিত এ ফসল বিক্রি করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
বাজারে নতুন আলু ওঠার শুরুতে ৩০/৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও দিন দিন বাজার দর নিম্নমুখী হতে থাকে। গত এক সপ্তাহ ধরে আলু বাজার প্রতি ৮/১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা থেকে উৎপাদনের লাভ ঘরেই তুলতে পারবে না আলু চাষিরা।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২৪৩ মেট্রিক টন। গত বছর উৎপাদন হয়েছে ৯৯ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন আলু।
বিগত বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চলতি মৌসুমে তিস্তার তীরবর্তী ১৫-২০টি গ্রামে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরূপ ফলনও হয়েছে।
বাজারে আগাম আলুর চাহিদা বেশি থাকায় মুনাফাও বেশি হয়। বিগত বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঋণের টাকায় ৩ বিঘা জমিতে আগাম আলুর চাষ করেন আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন গ্রামের আলু চাষি আব্দুল মালেক।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, ঋণের টাকায় ৩ বিঘা জমিতে আগাম আলুর চাষ করেছেন। কিন্তু তার স্বপ্ন পরিপক্ক হতে না হতেই ঝরে গেল। আলুর দরপতন হওয়ায় পুঁজিই খুঁজে পাচ্ছেন না। অপরদিকে ঋণের কিস্তি মিটাতে আলু মজুদ না করে বিক্রি করতেও বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা।
কালীগঞ্জ উপজেলার চাকলা গ্রামের আলু চাষি নগেন্দ্র জানান, আলুর ফলন দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গিয়েছিল। তার দুই বিঘা জমিতে আলু বস্তা করা পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে ৩৫/৪০ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে আলুর দাম ২৫/৩০ হাজার টাকা। মোটা অংকের টাকা লোকসান গুণছেন তিনি।
লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিদু ভুষন রায় বাংলানিউজকে জানান, নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু গ্রামে আগাম জাতের আলুর চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন হয়েছে দ্বিগুণ। তবে বাজার দর কম থাকায় কৃষকরা লাভবান হতে পারছেন না। এ জন্য আলুর ব্যাপক বাজার সৃষ্টির দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৭
আরএ