ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির বইতে ৭ম শ্রেণির পড়া

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৭
দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির বইতে ৭ম শ্রেণির পড়া ভুলে ভরা পাঠ্য বই

কুষ্টিয়া: সবে মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পাশ করেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী আরিফা খাতুন। নতুন বছরের শুরুতে স্কুলে ভর্তি হয়েছে। সেইসঙ্গে বছরের প্রথম দিনেই বইও পেয়েছে। নতুন স্কুল, নতুন ক্লাস, নতুন বই। খুব খুশি হয়েছিলো সে।

দাখিল পর্যায়ের ৬ষ্ট শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত সব বইই পেয়েছে সে। সব ঠিক থাকলেও ইংরেজি গ্রামার বইটি পুরোটাই উল্টা-পাল্টা।

কারণ শুরুতেই রয়েছে ভুল!
 
বইয়ের মলাটের উপরে লেখা রয়েছে ``English Grammar And Composition” Dakhil , Class Six. উপরের লেখাতে কোথাও কোন ভুল নেই। বইয়ের মলাটও বেশ আকর্ষণীয়, তবে মলাটটি উল্টালেই দেখা যায় ``English Grammar And Composition” Dakhil , Class 7.

বইটি সম্পাদনা করেছেন মো. জহুরুল ইসলাম। প্রকাশনা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।

ভুলটা দেখতে পেয়ে সে তার মাদ্রাসার শিক্ষককে জানায়। তাকে বইটি জমা দেওয়ার কথা বলেন শিক্ষক।
 
আরিফা খাতুনের মতো হাজারো শিক্ষার্থী এমন বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছে এবার। কেউ পেয়েছে ভুলে ভরা নতুন বই। আবার কারো বইটাই উল্টা-পাল্টা।  

সদরপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শেখ মহিউদ্দিন আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিকাংশ ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি গ্রামার বইতে ৭ম শ্রেণির অধ্যায় রয়েছে। মলাটে রয়েছে ৬ষ্ঠ শ্রেণির বই কিন্তু ভিতরে সেটা ৭ম শ্রেণির। এই নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে।

তিনি আরো জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণির যে শিক্ষার্থীদের বইতে এমন ভূল রয়েছে তারা বই ফেরত দিচ্ছে তবে পর্যাপ্ত সঠিক বই না থাকায় আমরা তাৎক্ষণিক পাল্টে দিতে পারছি না।

মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার বাংলানিউজকে জানান, এরকম ভুল অনেক রয়েছে। কোন কোন বইয়ের মধ্যে দেখা গেছে প্রথম অধ্যায় রয়েছে তো পরের অধ্যায় গুলো নেই। আমাদের কাছে জানালে আমরা তা পরিবর্তন করে সঠিক বই দিয়ে দিচ্ছি।

তিনি আরো জানান, প্রিন্টিংয়ের ভুলের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ ধরনের ভুলের জন্য বিপাকে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
কুষ্টিয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম ছায়েদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এধরনের ভুলের জন্য দায়ী হলো প্রেসের কর্মচারীরা। অল্প সময়ে বেশি বই ডেলিভারি দেওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করায় এ ধরনের ভুল হয়েছে।

তিনি আরো জানান, আমাদের চাহিদার চেয়ে ৫% বই সরকার বেশি দিয়েছে। কোন শিক্ষার্থী স্কুলে ভুল আছে এমন বই ফেরত দিলে তাদের সঠিক বই দেওয়া হবে। যদি স্কুলে বই না থাকে তাহলে প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের জানালে আমরা বই পৌঁছে দেব।

এ ব্যাপারে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার একান্ত সহকারী মোসাদ্দেক হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এগুলো যারা বই মুদ্রন করে তাদের অদক্ষতার কারণে হয়েছে। বিষয়টা কতৃপক্ষকে জানানো হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।