ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাত খুনের মামলার রায়ে সর্বত্র সরকারের প্রশংসা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
সাত খুনের মামলার রায়ে সর্বত্র সরকারের প্রশংসা পাবলিক বাসে সাত খুনের রায় নিয়ে আলোচনা

ঢাকা: আবারও সব শ্রেণির মানুষের আলোচনায় নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলা। এবার আলোচনার বিষয়বস্তু মামলার রায় প্রকাশ নিয়ে। এ মামলায় যে রায় দেওয়া হয়েছে তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। আলোচনায় পিছিয়ে নেই পাবলিক বাসের যাত্রীরাও। সর্বত্রই সরকারের প্রশংসা

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সারাদিনই এ মামলার রায় নিয়ে ইতিবাচক আলোচনায় বেশিরভাগ পাবলিক বাসের যাত্রীরা। পাশাপাশি তারা সরকারের প্রশংসা করতেও ভুলছেন না এবং প্রত্যাশা করছেন অচিরেই এ রায় কার্যকর করা হবে।

 

বাড্ডা লিংক রোড এলাকা থেকে বিআরটিসি বাসে করে মোহাম্মদপুর যাচ্ছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র। তাদের মধ্যে কথা হচ্ছিল নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার রায় নিয়ে। তাদের একজন বাবুল হোসেন সাজন বাংলানিউজকে বলেন, এই মামলায় যে রায় হয়েছে সেটি সবার প্রত্যাশিত ছিল।  

বাবুল বলেন, অনেকের মনে সন্দেহ ছিল এই মামলায় কি হয়, না হয় এসব নিয়ে। রায় ঘোষণার পর এখন সব পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখন আমরা চাইবো যেন রায় দ্রুত কার্যকর হোক এবং এর মাধ্যমে সবাই আবারো জানুক যে, বর্তমান সরকারের আমলে অন্যায় করে পার পাওয়া যায় না।

ফার্মগেইট থেকে নিউ ভিশন বাসে করে মতিঝিল যাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পারভেজ খান। তার কাছে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাংলানিউজকে বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো যে বর্তমান সরকারের আমলেই ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভব। আমি আশা করি এই সরকারের আমলে যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। তেমনি এই মামলার রায়ও কার্যকর করা হবে।
 
গুলিস্তান থেকে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসে স্বপরিবারে টুঙ্গী যাচ্ছিলেন মিঠুন হোসেন। এই মামলার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমি প্রথমেই এই জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ এই সরকারের আমলে কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। এই মামলায় রায় প্রকাশ হওয়ার পর তা আবারও প্রমাণ হলো।

পাবলিক বাসে সাত খুনের মামলার রায় নিয়ে আলোচনা২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের তিনদিন পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

ওই ঘটনায় নিহত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম।

সাত খুনের পর প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার ৪ সহকর্মী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একই থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ মণ্ডল সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০১৬ বছরের ০৮ ফেব্রুয়ারি ৭ খুনের দু’টি মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামির উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। র‌্যাবের ৮ সদস্যসহ পলাতক ১২ আসামির অনুপস্থিতিতেই বিচারকার্য সম্পন্ন হয়। তবে পলাতক ১২ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে ৫ জন আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

দু’টি মামলারই অভিন্ন সাক্ষী ১২৭ জন করে। তাদের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১০৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
 
মামলার সর্বশেষ ধাপ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে গত বছরের ৩০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে রায়ের জন্য ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি তারিখ হিসেবে ধার্য করেন আদালত।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত। রায়ে প্রধান আসামি নূর হোসেন ও র‌্যাবের বরখাস্তকৃত তিন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এই মামলার ৩৫ জন আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
এমএইচকে/পিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।