ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেমের কারণেই আত্মঘাতী সুলতান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
প্রেমের কারণেই আত্মঘাতী সুলতান আত্মহত্যার আগে সুলতানের ফেসবুক পোস্ট।

বেরোবি,  রংপুর:  প্রেমঘটিত কারণেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুলতান মাহমুদ আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বিষয়টি  বাংলানিউজের কাছে স্বীকার করেছেন সুলতান মাহমুদের বড় ভাই রঞ্জু ওরফে ভান্ডারি।

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কামাড়ের মোড়ের একটি ছাত্রাবাস থেকে পুলিশ সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ১৫ নং ওয়ার্ডের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ শেখের পুত্র।

তারা চার ভাই বলে জানা গেছে।

সুলতান মাহমুদের পরিবার ও বন্ধুরা বাংলানিউজকে জানান, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার এক মেয়ের সাথে ৪/৫ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুলতান মাহমুদের। বর্তমানে সেই মেয়ে রৌমারীর একটি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে দুই পরিবারের লোকজন বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। মেয়ের পরিবারের তরফ থেকে দুই বছর সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন সময় মেয়ের বিয়ের চেষ্টা চালানো হয়।

গত বুধবার (১৫ নভেম্বর)   আবারও মেয়ের বিয়ে অন্যখানে ঠিক করার চেষ্টা করে তার পরিবার। বিষয়টি সুলতান  মাহমুদ জেনে গেলে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের পোস্ট  ও তার ব্যবহৃত কক্ষের ওয়ালের লেখায়  বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফেসবুকে তার সর্বশেষ স্ট্যাটাসটি হল, ‘সময় এসেছে ইতিহাস পাল্টাবার,,, পাল্টে যাচ্ছি তাই,,"।

এছাড়াও তার কক্ষের ওয়ালে প্রেমের গান লেখা দেখা যায়। তার শরীরেও ইংরেজি বড় হাতের 'টি' (T) অক্ষরের কাটা ক্ষত দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, দুপুরের পর সে বৈদ্যুতিক ফ্যানে গামছায় ঝুলে আত্মহত্যা করে।

ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীরা বাংলানিউজকে জানায়, সকাল থেকেই সে রুমের দরজা খোলেনি। সন্ধ্যার দিকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় যে, সুলতান কোনো মোবাইল রিসিভ করছে না। এর আগে তার এক সহপাঠী শিট নেওয়ার জন্যও তার কক্ষের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করে।
অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও তার কোনো সাড়া না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায় ছাত্রাবাসের  শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শফিক আশরাফ পুলিশ নিয়ে তার কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ফ্যানের সঙ্গে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

সুলতান মাহমুদের বড় ভাই রঞ্জু ওরফে ভান্ডারি বাংলানিউজকে বলেন, প্রেমের কারণে আমার ভাইয়ের অকালে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। আমার অন্য দুই ভাই একরামুল ও মিলু রংপুরে গেছেন। তারাই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহিব্বুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবার যেভাবে চাইবে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।