ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিয়ে বাড়ির খাবার ১শ টাকায় ৩ জন

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৭
বিয়ে বাড়ির খাবার ১শ টাকায় ৩ জন রাজধানীর বাংলামোটর সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ফেলে দেওয়া খাবারের ভ্রাম্যমাণ দোকান- ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বিয়ে বাড়ি,পারিবারিক অনুষ্ঠান কিংবা যেকোনো আয়োজন ঘিরে থাকে বাহারি সব খাবারের আয়োজন। আর অতিথিদের খাবার পরিবেশন করার পর কিছু মানুষের নজর থাকে সেই খাবার সংগ্রহের দিকে। যারা নষ্ট কিংবা ফেলে দেওয়া খাবার সংগ্রহ করে রাতে বিক্রি করেন।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর বাংলামোটরের সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দেখা যায়, ফেলে দেওয়া খাবার কিনতে ক্রেতাদের কাড়াকাড়ি।  

বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় খাবার বিক্রেতা রাজুর।

নিজেকে পরিচয় দেন একটি কমিউনিটি সেন্টারের কর্মী হিসেবে। কমিউনিটি সেন্টারের হাজিরা হিসেবে রাজু প্রতিদিন পান দেড়শ টাকা। কিন্তু এই অল্প টাকা দিয়ে রাজধানীতে থাকা আবার পুরো পরিবার চালানো সম্ভব নয়। তাই অনুষ্ঠানে ফেলে দেওয়া খাবার সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করেই চলে তার পুরো সংসার।
রাজধানীর বাংলামোটর সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ফেলে দেওয়া খাবারের ভ্রাম্যমাণ দোকান- ছবি: ডিএইচ বাদল
প্রতিদিন কি পরিমাণ খাবার বিক্রি হয় জানতে চাইলে বাংলানিউজকে রাজু বলেন, যেদিন  যেমন খাবার সংগ্রহ করতে পারি সেদিন তেমন আয় হয়। তবে খাবার আনলে হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়। আবার কোনোদিন এর চেয়ে কম কিংবা আরও বেশি হয়। মূলকথা খাবারের ওপর নির্ভর করে আয়।  

কথায় কথায় রাজু আরও বলেন, এখানে কাচ্চি বিরিয়ানি,মোরগপোলাও,বোরহানি, জর্দা,মুরগির রোস্ট ও গরুর মাংস পাওয়া হয়। এসবই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খাবার। যা হাড়ি থাকে কিংবা অনুষ্ঠানস্থল থেকে তারা এ খাবার সংগ্রহ করেন। এরপর রাতে বিক্রি করেন। প্রায় ২ বছর ধরে তিনি এ সব খাবার বিক্রি করেন তিনি।
রাজধানীর বাংলামোটর সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ফেলে দেওয়া খাবারের ভ্রাম্যমাণ দোকান- ছবি: ডিএইচ বাদল
খাবারের মান প্রসঙ্গে ক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, খাবার ভালো। দামি দামি খাবার এখানে সস্তায় বিক্রি হয়। আমরাও খাবার খেয়ে তৃপ্তি পাই। এক কেজি ১শ টাকা। আর এক কেজি খাবার কিনলে তিনজনে খাওয়া যায়। কাচ্চি বিরিয়ানী এতো কম টাকায় কি খেতে পরছেন, এজন্য খাবার বিক্রেতাদের ধন্যবাদও জানান তিনি।

কিশোরগঞ্জের আব্দুল হালিম। বছর পাঁচেক ধরে তিনিও এ সব খাবার বিক্রি করেন। তিনি বলেন, রাজধানীর নামকরা একটি ক্লাবে কাজ করেন। আর সেখান থেকে তিনি খাবারগুলো সংগ্রহ করে রাতে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। এতে নিম্নবিত্তরা যেমন মজার মজার খাবার কম দামে খেতে পারছেন তেমনিভাবে আবার তিনিও লাভবান হচ্ছেন। যেমন খাবার আনলেই ১ হাজার ২শ টাকা থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা বিক্রি করতে পারেন।

তিনি বলেন, তার এক  ছেলে ও দুই মেয়ে। তারা সবাই পড়ালেখা করে। তিনি ক্লাবে কাজ করে  মাসে পাঁচ হাজার টাকা আয় করেন। কিন্তু এই টাকা দিয়ে তাদের পড়ালেখা করানো সম্ভব হয় না। তাই সপ্তাহে ২ থেকে ৩দিন খাবার বিক্রি করতে আসি। আর খাবার বিক্রি করেই পুরো পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলতে পারছেন। যোগ করেন আব্দুল হালিম।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭ 
এসজে/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।