ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নৌযানে আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে ঘটছে দুর্ঘটনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
নৌযানে আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে ঘটছে দুর্ঘটনা লঞ্চে আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে ঘটছে দুর্ঘটনা/ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: নৌরুটে কখনও লঞ্চে-লঞ্চে সংঘর্ষ, কখনও বাল্কহেড-কার্গোর সঙ্গে লঞ্চের সংঘর্ষের খবর প্রায়ই পাওয়া যায়। তবে নৌযানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও কর্তৃপক্ষের জনসচেতনতায় প্রাণহানিকর নৌ-দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমে গেছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এমন দাবি করলেও নৌযানগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এখনও শতভাগ নিশ্চিত হয়নি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, নৌপথে সংঘের্ষের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। চলতি বছরের ২২ এপ্রিল বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর চরবাড়িয়া পয়েন্টে বালুবাহী কার্গোর সঙ্গে এমভি গ্রিন লাইন-২ লঞ্চের ধাক্কা লেগে কার্গোটি ডুবে যায়।

তবে অল্পের জন্য বেঁচে যায় ৫ শ’এর মতো যাত্রী।  

প্রতক্ষ্যদর্শীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গ্রিন লাইনের মাস্টার মাইক দিয়ে কার্গোর মাস্টারকে বার বার সতর্ক করেও তা কাজে আসেনি। আর দায়িত্বরতরা বলছেন, গ্রিন লাইনে আধুনিক সব প্রযুক্তি থাকলেও ডুবে যাওয়া বাল্কহেডে ভিএইচএফ রেডিও না থাকায় তার মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

লঞ্চের কিছু যন্ত্রপাতি/ছবি: বাংলানিউজসূত্রমতে, লঞ্চচালনায় রাডারের ব্যবহার বহু বছর আগে থেকে চলে আসলেও প্রায় ১০ বছর ধরে লঞ্চে পথপ্রদর্শক হিসেবে জিপিএস, নদীর তলদেশের গভীরতা মাপার জন্য ইকোসাউন্ডার, কুয়াশার জন্য ফগলাইট, এক নৌযানের সঙ্গে অন্য নৌ-যানের যোগাযোগের জন্য অতি ক্ষমতাসম্পন্ন ভিএইচএফ রেডিও, জাহাজ দ্রুত নিয়ন্ত্রণের জন্য ইলেকট্রিক হুইল ব্যবস্থা সংযোজন শুরু হয়। প্রতি বছর এর ব্যবহার বাড়লেও এখনও সব নৌযানে এগুলো সংযোজিত হয়নি।  

পারাবত-১২ লঞ্চের মাস্টার আবুল কালাম বলেন, নৌপথে শুধু লঞ্চই চলাচল করে না, রয়েছে কার্গো ভ্যাসেল, অয়েল ট্যাংকার, বাল্কহেডসহ নানা ধরনের নৌযান। এগলো শতভাগ আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর না হওয়ায় সম্যস্যা রয়েই গেছে। আর এ অবস্থায় থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র বলছে, ঢাকা-বরিশাল রুটে দীপরাজ, কীর্তনখোলা, সুন্দরবন, পারাবতসহ বেশ কয়েকটির ডজনখানেকের ওপরে লঞ্চে রাডার এবং সর্বোচ্চ জিপিএস সিস্টেম ছাড়া আধুনিক কোনো সরঞ্জামের ব্যবহার নেই।  

লঞ্চের কিছু যন্ত্রপাতি/ছবি: বাংলানিউজবিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু জানান, বেশ কিছু আধুনিক সরঞ্জাম ঢাকা-বরিশাল রুটের নৌযানগুলোতে সংযোজন করা হয়েছে। তবে মালবাহী ও যাত্রীবাহী জাহাজের সংঘর্ষসহ নানা দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে যোগাযোগ করতে না পারা। সাধারণত ভিএইচএফ রেডিও না থাকলেও এক জাহাজের মাস্টার অন্য জাহাজকে মাইক দিয়ে বার্তা দেন। যা অনেক সময় অন্য জাহাজ পর্যন্ত পৌঁছায় না। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে।

তিনি বলেন, মূলত এখন ভিএইচএফ রেডিও ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে নৌযানের মালিক ও কর্তৃপক্ষ পর্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেকোন ধরনের ক্ষতি এড়াতে বিশেষ করে কুয়াশার মৌসুমে ভিএইচএফ সুবিধা বাধ্যতামূলক করার জন্য বলা হয়েছে।

নৌ-পরিবহন অধিদফতরের চিফ সার্ভেয়ার মুইনউদ্দিন জুলফিকার জানান, জাহাজ বানাতে গেলে কমিউনিকেশনের কিছু যন্ত্রপাতি লাগাতে হয়। ভিএইচএফ তার মধ্যে একটি। যার বিষয়ে আমাদের আইনেও বলা আছে। বড় জাহাজের জন্য ভিএইচএফ লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।

বাংলা‌দেশ সময়: ০২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
এমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।