বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় মানববন্ধনের র্যালিটি বেনাপোল কাস্টমস হাউজ থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক বেনাপোল কাস্টমস-ইমিগ্রেশন ভবন প্রদক্ষিণ করে। পরে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সামনে ফিরে সেখানে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, ইমিগ্রেশন পুলিশের বিভিন্ন অনিয়ম কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় তারা কাস্টমস কর্মচারীদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে তাদের পাঁচ সদস্য আহত হয়ে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলার সুষ্ঠু বিচার না হলে দেশজুড়ে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান বক্তারা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, খুলনা-যশোর-বেনাপোল কাস্টমস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাঙালী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আল মামুনসহ বেনাপোল কাস্টমস হাউজের প্রায় তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এদিকে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন পুলিশের মধ্যে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় বেনাপোল আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন-কাস্টমস ভবন পরিদর্শন করেছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল চৌধুরী, জেলা পুলিশের নাভারণ সার্কেলের এএসপি এমরান হোসেনসহ পুলিশ ও কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদিকে কাস্টমস ও পুলিশের মধ্যে দ্বন্দ্বের ঘটনায় সকাল থেকে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন এ পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়তকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। কাস্টমস সদস্যরা তাদের মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে ঠিকমত দায়িত্ব পালন না করায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী অনিতা দাস জানান, আগে পাসপোর্টের কাজ শেষ করতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগতো। এখন কাস্টমস-পুলিশের গণ্ডগোলের কারণে তারা বেনাপোল চেকপোস্টে ৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ও ভারতে ঢুকতে পারেননি। একই কথা বলেন ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রী আব্দুর রহমানও।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর শরীফ বাংলানিউজকে জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনছেন কাস্টমস সদস্যরা। যাত্রীরা যাতে কোনো হয়রানি না পোহায় এ কারণে সবাইকে সঠিক নিয়মে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর গতকালের ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা মীমাংসা করে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য ঊধ্বর্তন কর্মকতারা কাজ করছেন।
বেনাপোল স্থবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানান, যাত্রী দুর্ভোগ নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের দুই জন আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে কাস্টমসে যান। এ সময় ওই যাত্রীর সঙ্গে মালামাল বেশি থাকায় কাস্টমস সদস্যরা ঘুষ দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ নিয়ে পুলিশ ও কাস্টমস সদস্যদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরে দুই পক্ষের অন্যান্য সদস্যরা ছুটে এসে উত্তেজিত হয়ে ভবনের আসবাবপত্র ও গ্লাস ভাঙচুর করেন। এ সময় কয়েকজন সামান্য আহত হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
এজেডএইচ/এমজেএফ