ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক বিভাজকে কিশোর-কিশোরীদের ‘অপরাধ আস্তানা'

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
সড়ক বিভাজকে কিশোর-কিশোরীদের ‘অপরাধ আস্তানা' সড়ক বিভাজকে বসেই চলছে কিশোর-কিশোরীদের মাদক সেবন/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সন্ধ্যা নামতে খানিকটা দেরি। শেষ বিকেলে ব্যস্ত সড়ক। সূর্যের আলো পাতার ফাঁক গলে পড়ছে সড়কের উপর। ব্যস্ত সড়কের দু’পাশে দ্রুতগতিতে যাচ্ছে একটি-দু’টি যানবাহন। হঠাৎ চোখ আটকে গেলো সড়ক বিভাজক বরাবর।

তার কাঁটার মাঝে ছোট একটি তাঁবুর মতো ঘর। চারপাশে কাপড় দিয়ে ঘেরা।

দরজা-জানালার পর্দা দিয়ে চারদিকে আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর মাঝখানে বসা তিনজন। তাদের শরীরের অর্ধেকটাই দেখা যাচ্ছে। দু’জন কিশোর, একজন কিশোরী।

বাসের গতিতে সড়কে ঝড়ের মতো বাতাসে উড়লো একপাশের আবরণ। ছোখ ছানাবড়া! 

ইনজেকশনের সিরিঞ্জের সুচ ঢুকছে কিশোরীর ডান হাতের কনুয়ের উল্টো দিকে। এক কিশোর সুচ পুশ করছে, অন্যজন হাত ধরে রেখেছে কিশোরীর। আর চোখ বন্ধ করে আছে কিশোরীটি। বুঝতে বাকি নেই তারা মাদক সেবন করছে।

সড়ক বিভাজকে বসেই চলছে কিশোর-কিশোরীদের মাদক সেবন/ছবি: বাংলানিউজমোটরসাইকেল থামিয়ে এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে কৌতূহল নিয়ে এপারে এসে দেখা গেলো মাদক-নেশায় মত্ত তারা।

তিনজনের হাতেই তিনটি পলিব্যাগ। স্বচ্ছ পলিথিনের ভিতর হলুদ বর্ণের কিছু উপাদান। তিনজনই পলিথিনের মুখ ধরে ফু দিচ্ছে, খানিক পর আবারও বাতাস টেনে নিচ্ছে মুখের ভিতর।

পকেটের মোবাইল বের করে তাক করে কয়েকটি ছবি তুলতে গেলে তারা এক মিনিট তাকিয়ে থেকে উঠে পড়লো। ডিভাইডার থেকে নেমে তার কাঁটার উপর দিয়ে পা বাড়িয়ে তিনজনই হাঁটা শুরু করলো। পিছন ফিরে কয়েকবার তাকিয়ে ঢুকে পড়লো গলির ভিতর।

সড়ক বিভাজকে বসেই চলছে কিশোর-কিশোরীদের মাদক সেবন/ছবি: বাংলানিউজমিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় রোববার বিকেলে দেখা গেলো কিশোর-কিশোরীদের এই অবাধ অপরাধ। গোল চক্কর থেকে রোকেয়া সরণি হয়ে কাজীপাড়া যাওয়ার আগেই আল মক্কা টিম্বার অ্যান্ড স' মিল এবং বেস্ট বাইয়ের মাঝ বরাবর সড়ক বিভাজকের জায়গাটি দেখে বোঝা গেলো এখানে নিয়মিত চলে কিশোর-কিশোরীদের মাদক সেবন। জায়গাটিতে বিছানো হয়েছে পুরাতন তোষক, যাতে আয়েশ করেই সেবন করা যায় মাদক।

প্রধান সড়কের উপর অপ্রাপ্তবয়স্কদের এভাবে মাদক সেবনের মতো অপরাধে জড়ালেও যেন দেখার কেউ নেই!

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।