ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দারিদ্র্যপীড়িত জীবনের দায়ভার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৮
দারিদ্র্যপীড়িত জীবনের দায়ভার পিয়ারা বেগমের গোরবমুঠি-ছবি-বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বাইক্কা বিলের পথে মাত্র দু’জন মানব-মানবী মিলে গেছেন বড় অবহেলায়, দারিদ্র্য সীমার শেষ পথটি ছুঁয়ে। ‘উন্নত দেশ’ এর সংজ্ঞাটি যেন প্রতিদিন-প্রতি মুহূর্ত মুখ-ভেঙাচ্ছে তাদের। 

শুধু তারাই নয়,  দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী আমাদের দেশের সব ছিন্নমূল মানুষকে সেই শব্দটি তিরস্কার করছে।
 
বাইক্কা বিলের খানাখন্দে ভরা পথ চলে গেছে বহুদূরে।

সকালের মিষ্টি রোদ ততক্ষণে উত্তাপ দেওয়ার চেষ্টায় রত। তবুও কুয়াশার চাদর যেন মুছে যেতে চাইছে না প্রকৃতি থেকে।
 
সেই পথের এক অংশে একটি জরাজীর্ণ কুঁড়েঘর। এক মধ্যবয়সী নারী সেই ঘরের পাশে বসে নলখাগড়ার লাঠির মতো শুকনো অংশগুলোতে আপন মনে গোবর লাগাচ্ছেন। এ যেন দারিদ্র্যপীড়িত জীবনের দায়ভার।  

পিয়ারা বেগমের গোরবমুঠি-ছবি-বাংলানিউজ
কি নাম? জিজ্ঞেস করতেই উত্তর এলো ‘পিয়ারা বেগম’। স্বামীর নাম জিজ্ঞেস করতেই পিয়ারা বেগম আর কথা বললেন না। একদম চুপচাপ হয়ে গেছেন। চুপশে গেছেন নিজের মতো করে। পর মুহুর্তেই পাশে থাকে একজন বললেন, গ্রামের মহিলারা স্বামীর নাম মুখে নেন না।
 
তাহলে উনার স্বামীর নামটা কি? মনে মনে এই জিজ্ঞাসাটি নীরব প্রশ্ন হলো। পুকুর ডিঙিয়ে  অন্য পার থেকে একজন বেশ উচুস্বরে উত্তর দিলেন, ‘মজনু মিয়া’।
 
কী করছেন? জানতে চাইলে পিয়ারা বেগম বলেন, গোবরের মুঠি বানাচ্ছি। এগুলো চুলায় জ্বালাবো। আমার তো আর লাকড়ি-বাঁশ কেনার ক্ষমতা নাই। তাই এগুলোই একমাত্র ভরসা।  
 
পিয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী হাঁটতে পারেন না। বিছানায় শুয়ে থাকেন সারাদিন। টাকা-পয়সার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি না।
 
পাঁচদিন পর পর পঞ্চাশ-একশটা করে বানাই এই গোবরমুঠি। তা দিয়ে রান্নার কাজটা কোনো রকম চলে- বলেন পিয়ারা বেগম।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮
বিবিবি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।