ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পরকীয়ায় আসক্ত স্বামীর হাতেই খুন হন শাহানারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৮
পরকীয়ায় আসক্ত স্বামীর হাতেই খুন হন শাহানারা সিরাজ ও খোদেজা

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় পরকীয়ায় আসক্ত স্বামীই গলা কেটে হত্যা করেছেন শাহানারা আক্তারকে (৫৫)।

গ্রেফতারের পর আদালতে এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিই দিয়েছেন গৃহকর্মী আবদুল্লাহ রানা (২২)।  

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সোনাগাজী মডেল থানা সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।


 
সংবাদ সম্মেলনে পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশিদ জানান, শুক্রবার সকালে সোনাগাজী পৌরসভার চরগনেশ গ্রামের ছদিক মিয়ার বাড়িতে শাহানারা আক্তারকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রোববার ফেনীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেনের আদলতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তাদের বাড়ির গৃহকর্মী রানা। জবানবন্দিতে রানা জানান, রানার মা হালিমার সঙ্গে সিরাজ-উদ-দৌলার পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে সিরাজ তার নামে জমি লিখে দিতে চাইলে তার স্ত্রী শাহানারা বাধা দেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে চার/পাঁচ মাস আগে হালিমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন এবং স্ত্রী শাহানারাকে ঢাকায় ভাইয়ের বাসায় তুলে দেন সিরাজ। ১৫ জানুয়ারি সেখানে থেকে বাড়ি আসেন শাহানারা। এরপর স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রক্ষিত সাত লাখ ৭৯ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিজেকে নমিনি বানিয়ে পোস্ট অফিসে পাঁচ লাখ টাকার এফডিআর করেন সিরাজ। এদিকে, হালিমার মা এবং ছেলেকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন।  
এছাড়া হালিমার সঙ্গেও পরকীয়া অব্যাহত রাখেন। এনিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ লেগেই থাকতো। অবশেষে সিরাজ আবদুল্লাহ রানা ও তার নানি খোদেজাকে জমি দেয়ার লোভ দেখিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মতো শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শাহানারাকে গরম পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর তাকে খাটের ওপর শুইয়ে রানা তার দুই হাত বেঁধে কুশন বুকের উপর চেপে ধরেন, তার নানি চেপে ধরেন দুই পা এবং সিরাজ ছুরি দিয়ে গলা কাটেন। কিন্তু মৃত্যু নিশ্চিত হচ্ছে না ভেবে পরে সিরাজ দা দিয়ে তার স্ত্রীর গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এসময় সিরাজ ও নিজের রক্তমাখা জামা বাড়ির পাশের খালের মধ্যে ফেলে আসেন রানা। পরে সিরাজ অটোরিকশায় করে মরদেহ সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে তার মানসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করেন এবং মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নেন।  

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্দেহজনক আচরণের কারণে সিরাজ, গৃহকর্মী রানা ও তার নানিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে এবং দা ও ছুরিটি উদ্ধার করে। পরদিন শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। সিরাজের ভাই বোরহান উদ্দিন সেলিমের বাধার কারণে তার সন্তানরা মামলা করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে বোরহান উদ্দিন সেলিম রোববার সকালে নিজে বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।  

সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশিদ জানান, ঘাতক সিরাজ ও খোদেজার রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৮
এসএইচডি/এসআই


**ফেনীতে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার, আটক ৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।