ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুন-গুমের অভিযোগে মামলা, ১১ বছর পর জীবিত উদ্ধার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৮
খুন-গুমের অভিযোগে মামলা, ১১ বছর পর জীবিত উদ্ধার আটক মা ও মেয়ে

বরিশাল: খুন ও লাশ গুমের অভিযোগে ভাইয়ের দায়ের করা মামলার ১১ বছর পর বোন ও তার মেয়েকে আত্মগোপন অবস্থান থেকে আটক করেছে ক্রিমিনাল ইনভেসটিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।  

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ইছাগুড়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ জোৎসনা বেগম ও তার মেয়ে জিবাকে আটক করা হয়।

বিকেলে বরিশাল নগরের পুলিশ লাইন রোডের সিআইডি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মো. ফরিদুজ্জামান জানান, ২০০৭ সালের ৩১ জুলাই বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ইছাগুড়া গ্রামের মো. সরোয়ার খান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় বাদী সরোয়ার তার বোন জোৎসনা বেগমের স্বামী আহাম্মদ উল্লাহ মুন্সীসহ ৬ জনকে নামধারী আসামি করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদীর বোন জোৎসনা বেগমের সঙ্গে মামলা দায়েরের ৯ বছর আগে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদের চরআইচা গ্রামের আহাম্মদ উল্লাহ মুন্সীর বিয়ে হয়। জিবা নামে তাদের ৫ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে জোৎসনা বেগমকে বিভিন্ন সময় মারধর করতো তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের ৯ই জুলাই যৌতুকের দাবিতে জোৎসনা বেগমকে বেদম মারধর করে তার স্বামী। এরপর থেকে জোৎসনা ও তার ৫ বছরের মেয়ে জিবার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

মামলার এজাহারে বাদী সন্দেহ পোষণ করে তার বোন ও বোনের মেয়েকে মেরে ফেলে লাশ গুম করা হয়েছে।

এরপর মামলায় তদন্তে নেমে থানা পুলিশের এসআই মাহাবুবুর রহমান একই বছরের ২৩ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। যে চার্জশিটে এজাহারভুক্ত ৬ আসামির মধ্যে ৪ জনকে বাদ দিয়ে আহাম্মদ উল্লাহ মুন্সী ও তার ভাই শহীদ মুন্সিকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে মামলাটি স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গেলে বিচারক ভিকটিম উদ্ধার না করে চার্জশিট দেয়ার জন্য সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

সিআইডি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি মামলাটি তদন্তের নির্দেশ হাতে পায়। তদন্তে নেমে ২৮ দিনের মাথায় মঙ্গলবার সকালে ইছাগুড়া গ্রাম থেকেই কথিত গুম হয়ে যাওয়া জোৎসনা ও তার মেয়ে জিবাকে আটক করে।

সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মো. ফরিদুজ্জামান জানান, বর্তমানে জোৎসনার বয়স ৩২ এবং তার মেয়ের বয়স ১৬ বছর বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পাশাপাশি মেয়ে জিবা চরমোনাইয়ের বুখাইনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

আটক ভিকটিমরা এতদিন আত্মগোপনে ছিলো বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের আত্মগোপনে থাকার কারণে বিবাদীরা অযথা মামলার শিকার হয়েছে। হাজতবাসও করতে হয়েছে।

তবে সিআইডি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন, যে তদন্তে বাদীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভিকটিমের স্বামীর যৌতুক চাওয়ার বিষয়টি নিয়েও তদন্ত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৭
এমএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।