ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ময়নাতদন্তের জন্য তোলা হলো সেই শিশুর মরদেহ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৮
ময়নাতদন্তের জন্য তোলা হলো সেই শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যুবরণ করা শিশুটির মরদেহ তোলা হয়েছে। ছবি-বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্সে মারা যাওয়া সাতদিনের সেই কন্যা শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের অজমির গ্রামের কবরস্থান থেকে তার মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মরদেহ তোলার সময় বড়লেখা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

 

কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জসীম সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে শিশুটির মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত ও ময়নাতদন্তের জন্য গত ৫ নভেম্বর বড়লেখার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমারের আদালতে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ নভেম্বর আদালত শিশুটির মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দেন।  

গত ২৮ অক্টোবর দেশব্যাপী পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট চলছিল। এসময় বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রাম এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু হয় সাতদিনের কন্যাশিশুটির। নিহত শিশুটি অজমির গ্রামের কুটন মিয়ার মেয়ে। শিশুটির তখনও নাম রাখা হয়নি।  

এ ঘটনার তিনদিন পর ৩১ অক্টোবর শিশুর চাচা আকবর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৬০ থেকে ১৭০ জন শ্রমিককে আসামি করে থানায় একটি মামলা (নং-১৮) করেন। এ মামলায় সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) উপজেলার মহদিকোনা গ্রামের হবীব আলীর ছেলে আলীম উদ্দিন (৪৮) এবং মঙ্গলবার (০৪ ডিসেম্বর) একই এলাকার জহির উদ্দিনের ছেলে জাকির হোসেন রাজনকে (২৪) গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দুজনকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নিহত শিশুটির চাচা আকবর আলী বলেন, ২৭ অক্টোবর রাত থেকে বাচ্চাটা কোনো কিছু খাচ্ছিল না, শুধু কাঁদছিল। সকালে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। চিকিৎসকদের কথামতো বাচ্চাটিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিই। কিন্তু সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকারী শ্রমিকরা অ্যাম্বুলেন্সটি দফায় দফায় আটকান। আকবর আলী অভিযোগ করেন, সিলেট যাওয়ার পথে বড়লেখা উপজেলার দরগাবাজারে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে দেন পরিবহন শ্রমিকরা। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেন। একইভাবে দাসেরবাজার এলকায় তাদের আটকানো হয়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে চান্দগ্রাম বাজারে আবার শ্রমিকরা অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেন। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের চালককে মারধরও করা হয়। বিনা চিকিৎসায় রাস্তায়ই শিশুটি মারা যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।