ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত স্মৃতিসৌধ

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮
শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত স্মৃতিসৌধ বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

সাভার (ঢাকা): ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এদিন বিশ্ব মানচিত্রে সৃষ্টি হয় সার্বভৌম দেশ লাল-সবুজের ‘বাংলাদেশ’। যা বাঙ্গালি জাতিকে এনে দেয় আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ বিজয় আর বাঙ্গালি জাতির সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিনিয়ে এনেছিলেন সেইসব শহীদের বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ।

তাই প্রতিবারের মতো এবারও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হতে পুরোপুরি প্রস্তুত সাভারের নবীনগরে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

জাতির গৌরব আর অহংকারের এ দিনটিতে ভোর থেকেই স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে নামবে লাখো মানুষের ঢল।

তাদের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে শহীদ বেদি। দিবসটি উপলক্ষে গণপূর্ত বিভাগের কর্মীদের টানা দশ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে এক নতুন রূপ ধারণ করেছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। লাল-সবুজের আভায় সেজেছে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা।

জাতির ৪৮তম বিজয় দিবস উদযাপনের ঊষালগ্নে যেন চিরচেনা রূপে ফিরেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। এই দিনটিতে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামবে এখানেই। তাইতো বাহারি ফুলের রঙ্গিন আভায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে স্মৃতিসৌধ এলাকা। কৃত্রিম হ্রদে ফুটে থাকা লাল শাপলা, সবুজ ঘেরা বৃক্ষরাজির মাঝে আলোর লুকোচুরি আর পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের রক্তিম লাল আভা স্নিগ্ধতা এনে দিয়েছে স্মৃতিসৌধ চত্বরে।  

সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এবার স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ভিন্নরূপে সাজানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই শেষ করা হয়েছে ধোয়ামোছা ও রং-তুলির কাজ। স্মৃতিসৌধের বিভিন্ন ধাপে রং-তুলির আঁচড়ের আল্পনায় অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে। স্মৃতিসৌধ মিনারের সামনের নিচু জায়গায় গাঢ় সবুজ ঘাসের মধ্যে শোভা পেয়েছে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনিসহ নানা রঙের ফুল গাছের চারা। যা প্রতিবারের মতো এবারও সৌধ এলাকাকে এনে দিয়েছে বর্ণিল রূপ।
বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ
তিনি বলেন, স্মৃতিসৌধের ভেতরে থাকা শতাধিক লাইট সচল করা হয়েছে। রয়েছে একাধিক বিমার প্রজেক্টর টু, বিমার প্রজেক্টর থ্রি, ওয়াল ওয়াস বোলার্ড লাইট ও মেটাল হেলাইড। এসব লাইট স্থাপনের ফলে রাতের স্মৃতিসৌধকে দেবে নতুন প্রাণ। ফলে খুব সহজেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের যাত্রীদের চোখে পড়ছে বর্ণিল স্মৃতিসৌধ। এমনকি বিমানের যাত্রীরাও সেই আলোকিত স্মৃতিসৌধকে দেখতে পাবেন অপরূপা বেশে।

ঢাকার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ মিজান শাফিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্মৃতিসৌধ এলাকায় এবার দিগুণ নিরাপত্তার দেওয়া হবে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দু’পাশ ও ব্রিজসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। বসানো হয়েছে অর্ধশতাধিক সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিতসহ বাড়ানো হয়েছে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি। এছাড়ও সাভারের আমিনবাজার থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত তিন স্তরের নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে।

সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ রাখা হয়। তবে ১৬ ডিসেম্বরের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশি কূটনীতিকদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পর তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানান পুলিশে এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।