ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যমুনায় জেলের জালে ধরা পড়ছে বাঘাইড়

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৯
যমুনায় জেলের জালে ধরা পড়ছে বাঘাইড় যমুনায় জেলের জালে ধরা পড়া বাঘাইড়

বগুড়া: যমুনার মাছ মানেই সুস্বাদু। বেঁচে থাকা বা দৈহিক বৃদ্ধির জন্য যমুনার মাছকে কৃত্রিম খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয় না। প্রাকৃতিক খাবারেই বেড়ে ওঠে এরা। এ কারণে যমুনার মাছের প্রতি সাধারণ মানুষের একটা বাড়তি টান থাকে। আর তা যদি হয় বাঘাইড় তবে তো কোনো কথাই নেই।

সেই বাঘাইড় ধরতে যমুনায় রাত কাটিয়ে দিচ্ছেন জেলেরা। কেননা এখন শুস্ক মৌসুম।

যমুনার পানি কমে এসেছে অনেকটা। এ সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যস্ত নদী পাড়ের জেলেরা। যমুনায় বাঘাইড় ধরতে প্রতিদিন বিকেল থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সন্ধ্যার পর জাল নিয়ে যমুনায় ছুটছেন জেলেরা।

মধ্যরাতে নৌকায় জাল ভরে ছুটছেন মাঝ নদীতে। সারারাত বাঘাইড় মাছের পেছনে সময় ব্যয় করে ভোরে চলে আসছেন নদীর কিনারে। তবে খালি হাতে নয়, কমবেশি বাঘাইড় মাছ ধরেই ফিরছেন জেলেরা। নৌকা ভেদে তিন থেকে দশ জনের দল বেঁধে যমুনায় নামছেন তারা।

গেলো বছরের চেয়ে এবার যমুনায় বেশি বাঘাইড় ধরা পড়ছে জানিয়ে যমুনা পাড়ের ছেলে জীবন চন্দ্র সরকার বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রত্যেক বছরের এ সময়ে যমুনার পানি অনেকখানি কমে আসে। আর যমুনা পাড়ের জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন এ সময়ের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকেন।

জীবন চন্দ্র সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে গণেশ চন্দ্র সরকার বাংলানিউজকে জানান, পানি কমে আসায় বগুড়ার যমুনার বেষ্টিত সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার জেলেরা যমুনায় মাছ ধরতে অসংখ্য ছোট ও মাঝারি আকারের নৌকা ভাসিয়ে তারা মাঝ নদীতে চলে যান। বাঘাইড় ধরে তবেই তারা কিনারে ভেড়েন।

জানতে চাইলে এসব জেলেরা বাংলানিউজকে জানান, প্রত্যেকটি দল রাত জেগে কমবেশি ৮-১০টি বাঘাইড় মাছ ধরেন। আবার কেউ কেউ এর চেয়ে বেশিও ধরেন। অবশ্য ওইসব দলে জেলে সংখ্যা বেশি থাকে। এছাড়া বিগত যেকোন বছরের চেয়ে এবার জালে তুলনামূলক বেশি বাঘাইড় ধরা পড়ছে বলেও জানান তারা।

জেলে সাধন মোহন্ত বাংলানিউজকে বলেন, ‘গেলো এক যুগের মধ্যে জালে এ পরিমাণ বাঘাইড় মাছ ধরা পড়েনি। এভাবে জালে বাঘাইড় ধরা পড়লে নদী পাড়ের জেলেরা অনেকটা স্বচ্ছল হবেন’।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, বাজারে যমুনার বাঘাইড় মাছের চাহিদা আলাদা। তুলনামূলক এ জাতের মাছের দামও বেশি। বর্তমানে জালে ১০ থেকে ৩০ কেজি ওজনের বাঘাইড় ধরা পড়ছে। এ মাছ ধরতে সাধারণ ফাঁসি জাল ব্যবহার করে থাকেন জেলেরা।
 
এসব জেলেরা বাংলানিউজকে জানান, মাছগুলো ধরার পর যমুনার কিনারে নিয়ে আসা হয়। ভোর থেকেই যমুনার বিভিন্ন ঘাটে এসে অবস্থান নেন বাঘাইড় মাছ ক্রেতারা। অনেক জেলেই মাছ ধরে সকাল সকাল সারিয়াকান্দি, ধুনট, কাজীপুর, শেরপুর, বগুড়া শহরের কয়েকটি আড়তে মাছ বিক্রি করতে নিয়ে যান।  
 
রকমভেদে পাইকারি হিসেবে এসব বাঘাইড় মাছ প্রতিকেজি ৮০০-৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। পছন্দ হলে ক্রেতা সাধারণ যমুনার বাঘাইড় মাছ কিনতে তেমন একটা দরদাম করেন না।

শফিকুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, প্রায় ১০ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ কিনেছেন তিনি। ৮০০ টাকা কেজি হিসেবে মাছটির দাম ধরা হয়েছে। একইভাবে ক্রেতা শাহিনুর ইসলাম ৮ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ একই দামে কিনেছেন বলে জানান। যমুনার মাছ স্বাদে অতুলনীয় বলেও জানান ক্রেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৯
এমবিএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।