ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ওয়াদা বাস্তবায়ন করতেই হবে: শেখ হাসিনা 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯
ওয়াদা বাস্তবায়ন করতেই হবে: শেখ হাসিনা  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান তার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের দেওয়া ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা নির্বাচনী ইশতেহারকে গুরুত্ব দিই। যে ওয়াদা আমরা জাতির কাছে নিয়ে এসেছি সেটা বাস্তবায়ন করতেই হবে। সেটা করতে হলে কাজ করতে হবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। 

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর রোববার (১৩ জানুয়ারি) প্রথম কার্যদিবসে নিজ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতাটা শুধু চেয়ারে বসে ভোগ করার নয়।

এটা জনগণের কাছে দ্বায়িত্ববোধ।

‘তাই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আমরা যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছি, সেগুলো বাস্তবায়ন করা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে দেশে শান্তি, নিরাপত্তা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। ’ 

পড়ুন>>দুর্নীতি নির্মূল করা হবে: প্রধানমন্ত্রী

আগের সরকারগুলোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১০ বছরে যে উন্নয়ন করছি, ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা তা করতে পারেনি? কেন পারেনি এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলেই মনে হয় আসলে যারা স্বাধীনতাই চায়নি তারা দেশের উন্নয়ন করবে কী করে? তারা দেশের উন্নতি করবে না, করতে চায় না। তাদের কাছে ক্ষমতা ছিলো একটা লোভের মতো।

তিনি বলেন, একটা জাতিকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে হলে তার একটা ভিশন থাকতে হবে, দিক-নির্দেশনা থাকতে হবে, লক্ষ্য ও পরিকল্পনা থাকতে হবে। সেটা না থাকলে কোনো দেশ এগোতে পারে না।  

‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে কোন দেশ উন্নত হলো, উন্নত দেশের দিকে মুখ করে তাকিয়ে থাকলে হবে না। আমাদের সবসময় নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো নিজের পায়ে দাঁড়াতে। আমরা আত্ম-মর্যাদা নিয়ে চলবো। অন্যদেশ যদি পারে আমরা পারবো না কেন? আমাদের কিসের অভাব? কোনো অভাব নেই,’ প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।  

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের শুধু উদ্যোগের অভাব, উদ্যমের অভাব, কাজ করার অভাব। তো সেই জায়গাটায় আমরা যখনই এসেছি দিনরাত পরিশ্রম করছি। সবাই তো বলছে, আপনারা এত খাটেন কেন? খাটাটা তো আমার নিজের জন্য নয়। খাটি দেশের জন্য, মানুষের জন্য। ’ 

তিনি বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। আমরাও সেইভাবে সমানতালে এগোতে পারবো না কেন? সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু আমরা প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়েছি, পরিকল্পনা নিয়েছি।  

একই সঙ্গে এসব বিষয়ে করণীয় ঠিক করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও হাতে নেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।  

তিনি বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করতে পারলেই যে একটা অর্জন করা যায় সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। এত অল্প সময়ের মধ্যে আমরা উন্নতি করে একটা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।  

‘আমরা আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে অন্তত এটুকু বলতে পারি যে আমরা জনগণের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। ’ 

গণতন্ত্র প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, পৃথিবীর বহু দেশ ২০০/৩০০ বছর ধরে গণতন্ত্র চর্চা করে আসছে। তাদের ওখানেও কী গোলমাল হয় না? গোলমাল আছে, দ্বন্দ্ব আছে, সবই আছে।  
‘আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠী। তারপরও আমরা সেই মানুষগুলোকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছি। ’ 

তিনি বলেন, এদেশের উন্নতি হলে নিজের পরিবার, প্রতিবেশী সবারই উন্নতি। তাহলে আমাদের এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে কেন? অহমিকাবোধ থাকবে কেন? সবাই মিলে কাজ করলে একটা দেশ যদি উঠে আসে সেটাই করতে হবে।  

শেখ হাসিনা বলেন, আর কখনও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যেন না আসতে পারে। যারাই আসুক স্বাধীনতার স্বপক্ষের, স্বাধীনতার চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাস করবে। স্বাধীনতার চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাস করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।  

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ ইশতেহার ও এসডিজি বাস্তবায়নে কর্মসূচি তুলে ধরেন।  

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, তৌফিক-ইলাহী চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক বক্তব্য দেন।
 
সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে সাচিবিক অনুবিভাগ, ব্যক্তিগত অনুবিভাগ, প্রেস অনুবিভাগ এবং নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন অধীনস্ত দফতরের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৯ 
এমইউএম/এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।