ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবশেষে দেশে ফিরলেন নির্যাতিত সুমিসহ ৯১ নারী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
অবশেষে দেশে ফিরলেন নির্যাতিত সুমিসহ ৯১ নারী নির্যাতিত সুমি (ফাইল ফটো)

ঢাকা: অবশেষে দেশে ফিরলেন সৌদি আরবে নির্যাতিত সেই গৃহকর্মী সুমি আক্তার। 

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় এয়ার এরাবিয়ার জি৯-৫১৭ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান সুমি। একই সঙ্গে সৌদি থেকে দেশে ফিরেছেন নির্যাতিত আরও ৯১ নারী গৃহকর্মী।

 

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক জহিরুল ইসলাম সুমিকে বিমানবন্দরে গ্রহণ করেন। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে সুমির বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনে সহায়তা করেন।

বিমানবন্দরে সাংবাদিকেরা সুমির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাননি। পরে সুমিকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গাড়িতে করে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।

বাংলানিউজে সুমিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সুমিকে দেশে ফেরাতে উদ্যােগ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ফেরেন সুমি আক্তার।  

>>>‘নার্স ভিসার কথা বলে সৌদি পাঠানো হয় সুমিকে’

সুমির স্বামী নূরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সুমি দেশে ফেরায় খুব আনন্দ লাগছে, তেমনি কষ্টও লাগছে। কারণ ভাগ্য বদলের আশায় সৌদি গিয়েছিল সুমি, এখন খালি হাতে ফিরছে। সবকিছুর পর সুমি দেশে ফেরায় সরকারকে ধন্যবাদ।

তবে দেশে ফেরার পর সংবাদমাধ্যমের অগোচরেই বিমানবন্দর ত্যাগ করেন সুমি। কিন্তু তার স্বামী নূরুল ইসলাম বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে  ব্র্যাকের কর্মীরা জানান, সুমি ফ্লাইট থেকে নেমে টার্মিনাল এক দিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। কিন্তু তার স্বামী ও গণমাধ্যম কর্মীরা টার্মিনাল-২ এ সুমি ও অন্য নির্যাতিত নারীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।  

সুমি আক্তার পঞ্চগড় জেলার বোদা সদর থানার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। দুই বছর আগে আশুলিয়ার চারাবাগের নুরুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

সম্প্রতি ফেসবুকে কান্নাজড়িত কন্ঠে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের কথা বলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান সুমি। পরবর্তীতে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

ভিডিওটিতে সুমি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি আমার সন্তান ও পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। আমাকে আমার পরিবারের কাছে নিয়ে যান। এখানে আমার ওপর অনেক নির্যাতন হয়। আর কিছুদিন থাকলে হয়তো মরেই যাবো। তাই প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুরোধ আপনারা আমাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যান। ’

বাংলানিউজে এমন খবর প্রকাশের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সুমিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সিরাজুল ইসলামকে নির্দেশ দেন।

এরপর সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে সুমিকে সৌদি আরবের জেদ্দার দক্ষিণ-দক্ষিণে নাজরান এলাকার কর্মস্থল থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশের তত্ত্বাবধানে নাজরান শহরের একটি সেইফ হোমে ছিলেন তিনি।

পরদিন মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে দেওয়া এক চিঠিতে সুমি আক্তারকে দেশে ফেরাতে ট্রাভেল এজেন্সি ‘রূপসী বাংলা ওভারসিজ’কে ২২ হাজার রিয়াল (প্রায় পাঁচ লাখ টাকা) ও প্লেনের টিকিট দেওয়ার প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে নাজরান শহরের শ্রম আদালতে সুমিকে দেশে ফেরার ‘ফাইনাল এক্সিট’ দেয়। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
টিএম/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।