ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শূন্যরেখায় বিএসএফের চৌকি স্থাপন!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
শূন্যরেখায় বিএসএফের চৌকি স্থাপন!

রাজশাহী: রাজশাহী সীমান্তে অবৈধভাবে অস্থায়ী চৌকি বসিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সাহেবনগর সীমান্তের শূন্যরেখায় বিএসএফ চৌকি বসায়। তবে সোমবার (০২ ডিসেম্বর) বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সেখানে গেলে বিএসএফ সদস্যরা পালিয়ে যায়।

বিজিবি জানায়, অস্থায়ী ওই চৌকি নির্মাণের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সাহেবনগর সীমান্ত ফাঁড়ির এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে পদ্মানদী। সেখান থেকে বের হয়ে একটি শাখা নদী উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী হয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার চরলবণগোলা এলাকায় ঢুকেছে। তবে শাখা নদীর ভাঙনে সেখানকার সীমানা পিলারগুলো গত বছরই নদীতে প্লাবিত হয়।

সম্প্রতি শাখা নদীতে পানি কমেছে। এতে পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে ছোট একটি চর পড়েছে। বিজিবি সদস্যরা শূন্যরেখা সংলগ্ন চরে গিয়ে টহল দিতেন কিছুদিন ধরে। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় ওই চরে হেঁটেই টহল পরিচালনা করতেন বিজিবি সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানায় গত ২৯ নভেম্বর রাতে তড়িঘড়ি করে বাঁশের মাচা পেতে ওপরে খড় ও পাটকাঠি দিয়ে অস্থায়ী চৌকি নির্মাণ করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পরদিন শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকে ভারতীয় সীমান্তের চর লবণগোলা ফাঁড়ির বিএসএফ সদস্যরা সেখানে গিয়ে অবস্থান নিয়ে টহল শুরু করে।

এ ঘটনায় বিজিবি সদস্যরা রোববার (০১ ডিসেম্বর) দিনের আলোতে একবার ও রাতে আরেকবার চরের কাছাকাছি যান। এ সময় তাদের চলে যাওয়ার সিগন্যাল দিলে শেষ পর্যন্ত চৌকি ছেড়ে পালিয়ে যান বিএসএফ সদস্যরা।

এরপর ওই রাতেই আবার নৌকায় করে গিয়ে বিএসএফ সদস্যরা চরে ওঠার চেষ্টা করেন। এ খবরে বিজিবিও চরে গিয়ে অবস্থান নেয়। ফলে বিএসএফ নৌকা ঘুরিয়ে ভারতের ভেতরে চলে যায়। তবে গভীর রাতে বিএসএফ আবারও চরের অস্থায়ী চৌকিতে গিয়ে অবস্থান নেয়। সোমবার (০২ ডিসেম্বর) সকালে বিজিবি সদস্যরা আবারও ওই চরে যায়। তখন বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে বিএসএফ সদস্যরা পালিয়ে যায়।

সীমান্তের নতুন এ চরটির সঙ্গে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড সংযুক্ত। চরের আশপাশে বাংলাদেশের ফসলি জমি রয়েছে। যেখানে কৃষকরা নিয়মিত চাষাবাদ করতেন। কিন্তু সেখানে বিএসএফ’র অস্থায়ী চৌকির কারণে এখন কৃষকরা জমিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাদের নিরাপত্তায় চরটিতে বিজিবির অস্থায়ী চৌকিও চেয়েছেন কৃষকরা।

বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, চৌকি শূন্যরেখার মধ্যে না ভারতীয় অংশে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনও। সীমান্তে সৃষ্টি অমীমাংসিত এই বিষয়টি সন্তোষজনক সমাধানের জন্য বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বিএসএফকে সরজমিন পরিদর্শনে আসতে আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা আসলে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষেই চৌকি স্থাপন নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
এসএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।