ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইছামতী নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে অভিযান 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
ইছামতী নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে অভিযান  ইছামতির পাড়ে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে অভিযান চলছে। ছবি: বাংলানিউজ 

পাবনা: পাবনায় শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে শহরের পাওয়ার হাউজপাড়া পুরাতন ব্রিজ এলাকা থেকে যৌথভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসন এ অভিযান শুরু করে। 

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযানে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ছাড়াও বিপুল সংখ্যা আইন-শৃংঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা অংশ নেয়।  

পাবনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাবনা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম অভিযান কার্যক্রম সমন্বয় করেন।

প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে বড় বড় দ্বিতল এবং তিনতলা ভবনসহ ৮০টি অবকাঠামো ভেঙে উদ্ধার করা হবে প্রায় ৫ একর সরকারি সম্পত্তি। যার অনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

এ সময় অবৈধ দখলদারের অনেকেই নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে জোরপূর্বক উচ্ছেদের প্রতিবাদ জানান। তবে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া মেনেই উচ্ছেদ পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।

উচ্ছেদের বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক কবির মাহামুদ জানান, নিয়ম মেনে সঠিকভাবে উচ্ছেদ পরিচালনা করা হচ্ছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে ইছামতির ৩৩৪ জন তালিকাভুক্ত অবৈধ দখলদারসহ গোটা জেলায় প্রায় সহস্রাধিক অবকাঠামো উচ্ছেদ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে দুই কিলোমিটার এলাকার নদীর অবৈধ জায়গা দখলমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম জহুরুল হক জানান, এ কাজের জন্য প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা ব্যয় হবে। পর্যায়ক্রমে পৌর এলাকার ৮ কিলোমিটার নদী ও ১১টি কালভার্ট ব্রিজ ভাঙা হবে বলে জানান তিনি। উচ্ছেদ অভিযান শেষ হওয়ার পরে নদীর দুইপারে হাঁটার রাস্তাসহ ছোট ছোট পার্ক নির্মাণ করা হবে।

ইছামতির পাড়ে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে অভিযান চলছে।  ছবি: বাংলানিউজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা ও মন্ত্রণালয়ে নিয়ম অনুসারে এ নদী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পাবনাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত চাওয়া পাওয়া এ নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার। সরকার দেশব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করছে। নদীর দখল এবং দূষণমুক্ত করে পাবনা শহরের সৌন্দর্য্যবর্ধন করা হবে। জোড় করে বা অন্যায়ভাবে কোনো কাজ করা হচ্ছে না। এ কাজে পাবনার আপামর জনগণ সহযোগিতা করছে।

এদিকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছেদ এলাকায় কান্না এবং হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। অনেককেই নিজ দায়িত্বে তাদের বাড়ি ঘর সরিয়ে নিতেও দেখা যায়। উচ্ছেদ হওয়া জায়গা নিজেদের দাবি করে অনেকে বলেন, আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়েছিলাম সময় বৃদ্ধির জন্য। আর আমাদের যাদের বৈধ কাগজ রয়েছে তাকে দেখিয়েছি কিন্তু তিনি আমাদের কোনো কথা মানছেন না। আমরা সরকারের কাছে এবং প্রশাসনের কাছে সময় এবং সঠিক নিয়মে নদীর দুইপাড়ের অবৈধদের উচ্ছেদ করার দাবি করছি। আমরা মনে করছি নদী না মেপে এ উচ্ছেদ অভিযান করা হচ্ছে। যা সঠিক নিয়ম মেনে করা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।