ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঈশ্বরদীতে শিশু শিক্ষার্থীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন!

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
ঈশ্বরদীতে শিশু শিক্ষার্থীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন! শিকলে বাঁধা শিশু শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত

পাবনা (ঈশ্বরদী): তিন দিন শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে মোবারক (১১) নামে এক শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের কদিমপাড়া বুড়া দেওয়ান মাজার সংলগ্ন নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।

 

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে জুমার নামাজের সময় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মোবারক পালিয়ে যাওয়ার পর ঘটনাটি ফাঁস হয়।

মারধর ছাড়াও ওই শিক্ষার্থীকে ৭ বার থুতু ফেলে সেই থুতু তাকে দিয়ে চাটানো হয়েছে। মাদ্রাসায় প্রতিদিনই তাকে মারধর করা হতো বলে সে পালিয়ে গিয়েছিল।

শুক্রবার রাতে ঈশ্বরদী থানায় বসে বাংলানিউজের কাছে  এসব অভিযোগ জানান ওই শিক্ষার্থীর মা মূর্শিদা খাতুন।

ভুক্তভোগী ওই শিশু শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঁচামরা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও মূর্শিদা খাতুন দম্পতির ছেলে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসায় শিক্ষার নামে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে সবেমাত্র  আমপারা শেষ করা মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের শিশু শিক্ষার্থী মোবারক মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে দাশুড়িয়ায় খালার বাড়িতে চলে যায়। সেখান থেকে বুঝিয়ে তাকে বুধবার (৮ অক্টোবর) মাদ্রাসায় ফেরত পাঠায় তার পরিবার। মাদ্রাসায় যাওয়ার পর মোবারককে তিন দিন লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছিল।  

মারধর ছাড়াও মোবারককে ৭ বার থুতু ফেলে সেই থুতু তাকে দিয়ে চাটানো হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ আদায়ের সময় লাইন থেকে পালিয়ে যায় সে। শিকল বাঁধা অবস্থায় তাকে এলাকার লোকজন উদ্ধার করে তাদের খবর দেয়। থানায় মোবারকের পেছন দিকে কোমড়ের নীচে পা পর্যন্ত নির্মম আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।  

ঘটনা প্রসঙ্গে আটক অধ্যক্ষ আব্দুল করিম বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার সময় তিনি ছিলেন না, ছুটিতে গিয়েছিলেন। এসময় শিক্ষার্থীদের দেখভালের দায়িত্ব ছিল শিক্ষক পিয়ারুল ইসলামের ওপর।  

শিক্ষক পিয়ারুল বাংলানিউজকে বলেন, আমি তাকে বাঁধি নাই। ওই শিক্ষার্থীর সম্পর্কে চাচা সিনিয়র ছাত্র ছাব্বির তাকে বেঁধে রেখেছিল। মারধরের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি।

মাদ্রাসার হাফেজ সমাপ্ত করা সিনিয়র ছাত্র ছাব্বির আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, শিশু মোবারক একবার পালিয়ে গিয়েছিল সে কারণে তার দাদি তাকে বেঁধে রাখার কথা বলেছিলেন। তাই তাকে বেঁধে রাখা হয়। তবে শিক্ষক পিয়ারুলই শিশুটিকে বেদম মারধর করেছে বলে ছাব্বির জানিয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, মাদ্রাসার শিক্ষকদের থানা হেফাজতে আটক রাখা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।