ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বারোপের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বারোপের দাবি কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বারোপের জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।  

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকরা সহায়তা ও সহযোগিতা না পেলে উৎপাদনশীলতায় প্রভাব পড়ে।

তাই কর্মক্ষেত্রে এবং পরিবারে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিতে আরও বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্যদিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস ও সাজিদা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা জানানো হয়।  

শনিবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় ‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যঃ বিনিয়োগকরুণ’ শীর্ষক এই সেমিনার।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে গুরুত্বারোপ ও প্রয়োজনীয়তা, সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ও কর্মক্ষেত্রসহ সব পর্যায়ে এর প্রচার ও প্রসার বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের দায়িত্ব আলোচনা করার উদ্দেশ্যে এই সেমিনার আয়োজন করা হয়।  

আয়োজনে বিলসের মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান, সাজিদা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ম্যানেজার ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজিস্ট রুবিনা জাহান, মনের বন্ধুর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তৈাহিদা শিপ্রা, ইনোভেশন ফর ওয়েলবিইং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এবং মেন্টাল হেলথ ফার্স্ট এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি লিডার মনিরা রহমানসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধে শ্রমশক্তিতে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে সাজিদা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ম্যানেজার ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজিস্ট রুবিনা জাহান বলেন, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকরা সহায়তা ও সহযোগিতা না পেলে শ্রমিকের উৎপাদনশীলতায় প্রভাব পড়ে। আমাদের জনসংখ্যা অনুযায়ী যে পরিমাণ সার্ভিস প্রোভাইডার দরকার, তার কমতি আছে। কিন্তু ক্লিনিক্যাল ও মেন্টাল ডিজঅর্ডার হলেই কিন্তু শুধুমাত্র সাইকিয়েট্রিস দরকার। আমাদের প্যারাকাউন্সেল তৈরি করতে হবে, সচেতনতা বাড়াতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে বিলসের মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য শুধু শ্রমজীবী মানুষের জন্যই নয় সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিনিয়ত শ্রমজীবী মানুষেরা নানাবিধ মানসিক সমস্যায় থাকেন। আমাদের দেশের শ্রম আইনে পেশাগত রোগ বিষয়টি উল্লেখ আছে, কাজ করতে গিয়ে শ্রমজীবীরা যেসব রোগে আক্রান্ত হন, তার তালিকায় অনেক রোগের উল্লেখ আছে। শ্রমিকরা যে পরিবেশে কাজ করে এবং বাস করে তাতে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। কর্মক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ ও সহকর্মীদের দুর্বব্যহার, যৌন নিপীড়ন, কু-অভ্যাস ইত্যাদি দমন না করা হলে সেটিও তার মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব ফেলে।

নারীর মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে মনের বন্ধুর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তৈাহিদা শিপ্রা বলেন, কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিতে মনোযোগী হওয়ার এখনই সময়। কর্মক্ষেত্রে হয়রানি, হতাশা ইত্যাদি এগুলো মানসিক স্বাস্থ্যে মারাত্বক প্রভাব পেলে। এজন্য কর্মক্ষেত্র আরও বেশি মানসিক স্বাস্থ্যবান্ধব হওয়া প্রয়োজন।

মেন্টাল হেলথ ফার্স্ট এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি লিডার মনিরা রহমান বলেন, প্রতি ৪ জনে ১ জন মানসিক সমস্যায় ভোগেন। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েনি তার বাইরে কেউই নয়। শুধু শ্রমিক নয়, ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা থাকেন তারাও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যা সমাধানে ‘পিয়ার সাপোর্ট’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) হেলথ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হানিফুর রহমান লোটাস বলেন, যারা শিল্পের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রথম সারির স্ট্যান্ডার্ড পোশাক তৈরি করেন, সেই শ্রমজীবীরা বেশিরভাই থাকেন বস্তিতে এবং তাদের বেশিরভাগেরই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। শুধু মেশিনের সঙ্গেই নয়, শ্রমিককে পরিবারের সঙ্গে, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে, সমাজের সঙ্গে, যাওয়া আসার পথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যেতে হয়। এক্ষেত্রে মালিকরা নিজস্ব দায়বোধ থেকে শ্রমিকের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যা সমাধানে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

আয়োজন থেকে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ে সম্মিলিত উদ্যোগ ও গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কেননা মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি সব পর্যায়ে এখন গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।