ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রায়হান হত্যা: এবার কনস্টেবল হারুন গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২০
রায়হান হত্যা: এবার কনস্টেবল হারুন গ্রেফতার রায়হান উদ্দিন

সিলেট: সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিনকে (৩০) নির্যাতন করে হত্যায় জড়িত বরখাস্ত হওয়া আরেক পুলিশ কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পিবিআিই।
 
শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) রাতে তাকে পুলিশ লাইন থেকে নিয়ে গ্রেফতার দেখানো হয়।

এর আগে গত ২০ অক্টোবর বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকেও রায়হান হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।  

শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদুজ্জামান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ নিয়ে মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতার হারুনুর রশিদকে শনিবার আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

গত ১১ অক্টোবর ভোররাতে রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। পরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

রায়হান ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন, পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হলেও নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ ছিল, পুলিশ ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরিবারের অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্ত দল ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর সত্যতা পেয়ে জড়িত থাকায় ইনচার্জ আকবরসহ ৪ পুলিশকে বরখাস্ত ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করেন।  বরখাস্ত হওয়া চারজনের মধ্যে তিনজন হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন-এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। তবে ঘটনার পর অন্য ৬ জন পুলিশ হেফাজতে থাকলেও আকবর পলাতক রয়েছেন।

মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে তদন্ত করছে পিবিআই। গত ১৪ অক্টোবর তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। গত ১৫ অক্টোবর মরদেহ কবর থেকে তোলার পর পুণরায় ময়নাতদন্ত করে পিবিআই।

নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের শরীরে ১১১ আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ফরেনসিক রিপোর্টে। লাঠি দ্বারা করা এসব আঘাতের ৯৭টি লীলাফোলা আঘাত ও ১৪টি ছিল জখমের চিহ্ন। আর অতিরিক্ত আঘাতের কারণে দেহের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণে রোববার সকাল ৭ টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় গত সোমবার (১৯ অক্টোবর) আদালতে ১৬৪ ধারায় সাক্ষ্য দেন তিন পুলিশ সদস্য সাইফুল, দেলোয়ার ও শামীম। পরে গত ২০ অক্টোবর পুলিশ লাইনে বরখাস্ত থাকা কনস্টেবল টিটুকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমাণ্ডে নেয় পিবিআই।

তবে ঘটনার মূলহোতা সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া এখনো পলাতক।  আর আকবরকে পালাতে সহায়তা ও তথ্য গোপন করা এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েবের অপরাধে ফাঁড়ির টুআইসি এসআই হাসান উদ্দিনকে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

এছাড়া ২১ অক্টোবর পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি- ক্রাইম অ্যানালাইসিস বিভিাগ) মুহাম্মদ আয়ুবের নেতৃত্বে পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত দল সিলেট ঘুরে যায়। তাদের পর্যবেক্ষণে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েবে এসআই আকবরের আরেক সহযোগী এসআই হাসান ও সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ আল মামুন জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। এরপর থেকে মামুনও পলাতক।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২০
এনইউ/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।