ঢাকা, বুধবার, ১ কার্তিক ১৪৩১, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গাইবান্ধায় শুরু হয়েছে দলবেঁধে মাছ ধরা মৌসুম ‘বৈত’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০
গাইবান্ধায় শুরু হয়েছে দলবেঁধে মাছ ধরা মৌসুম ‘বৈত’ দলবেঁধে মাছ ধরা মৌসুম বৈত। ছবি: বাংলানিউজ

গাইবান্ধা: খাল-বিল, নদী, জলাশয়ের পানি কমায় গাইবান্ধায় শুরু হয়েছে দলবেঁধে মাছ ধরার উৎসব মৌসুম ‘বৈত’।  

সোমবার (২৬ অক্টোবর) সকাল থেকে জেলা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ঝিনিয়ার বিল ও কুপতলা ইউনিয়নের নলিগলির বিলে মাছ ধরার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে এ মৌসুম।

 

সাধারণত কার্তিক মাসের প্রথমদিক থেকে শুরু করে মাঘ মাস অবধি যখন বড় বড় বিল, নদী ও খালে পানি কমে যায়, তখনি এ দলবেঁধে মাছ ধরার বৈত মৌসুম শুরু হয়। বৈত মৌসুম জেলার প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা গ্রামীণ ঐতিহ্য। পুরো শীতকাল জুড়ে চলে এ মৌসুম।

বৈতে অংশ নেওয়ারা জানায়, গাইবান্ধার ছয়টি উপজেলাতে রয়েছে পৃথক পৃথক সৌখিন মাছ ধরার দল। বৈত দলের আলোচনার ভিত্তিতে মাছ ধরার নির্দিষ্ট জলাশয়, তারিখ, সময়, যাত্রার স্থান নির্ধারণ করে গ্রামের হাট-বাজারে ঢোল পিটিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হয়।  

বৈত দলে একজন দলনেতা থাকেন। যার কাছে থাকে মহিষের শিং দিয়ে তৈরি বড় একটি বাঁশি। যাকে বলা হয় বৈতের শিঙ্গা। যা দিয়ে বিউগলের মতো উচ্চস্বরে শব্দ বের হয় এবং অনেক দূর থেকে তা শোনা যায়। নির্ধারিত স্থানে যথা সময়ে শিঙ্গায় ফুক দেওয়া হয় বার বার। আর শিঙ্গার শব্দ শুনে নিজ নিজ পছন্দ মতো মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম নিয়ে দলবেঁধে সমবেত হতে থাকে সৌখিন শিকারিরা।  

পূর্ব নির্ধারিত বিল জলাশয়ে দলবদ্ধ হয়ে মাছ ধরা চলে দিনভর। এতে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যে কেউ এতে সামিল হতে পারেন। সে কারণে একটি বৈতের দল যখন কোনো বিল বা নদীতে একযোগে দলবেঁধে মাছ ধরার জন্য নামে। সবার হাতে থাকে মাছ ধরার সরঞ্জাম পলো, হ্যাংগার জালি, পলো জালি, হ্যাগা, মুঠ জাল, কোঁচা, ক্যাটা, তৌরা জাল, ঝাঁকি জাল ইত্যাদি।  

বৈত উৎসবে অংশ নেওয়াদের মধ্যে অনেকে মাছ পান আবার অনেকে একটি মাছও পান না। কিন্তু কারও কোনো দুঃখ থাকে না। কেননা সবার কাছেই দলবেঁধে মাছ ধরতে যাওয়ার আনন্দটাই মূল উপভোগ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।