ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভাস্কর্য নিয়ে উস্কানি ছড়ালে সরকার বসে থাকবে না: তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২০
ভাস্কর্য নিয়ে উস্কানি ছড়ালে সরকার বসে থাকবে না: তথ্যমন্ত্রী তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

ঢাকা: ভাস্কর্য নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য যদি চলতেই থাকে তাহলে সরকার নিশ্চয় বসে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “আসলে এসব কথা বলে তারা সমাজকে বিভ্রান্ত করতে চায়।

আমি আশা করবো, এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য তারা পরিহার করবে। এটি কখনো জনগণ মেনে নেয়নি, নেবেও না। বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদের, জঙ্গিবাদের স্থান নেই। ”

সোমবার (৩০ নভেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষ সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের বক্তব্য জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভাস্কর্যকে মূর্তির সঙ্গে তুলনা করে সমাজকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ”

তিনি বলেন, “আমরা ইসলামী দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাই, ইরানে ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র গড়ে তোলা হয়েছে, সেখানে আয়াতুল্লাহ খোমেনির ভাস্কর্য আছে। ইরাকে রাস্তায় রাস্তায় ভাস্কর্য আছে, তুরস্কে এরদোয়ানের ভাস্কর্য আছে। পৃথিবীর ইসলামিক দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে যদি তাকাই, সেখানে রাস্তায় রাস্তায় ভাস্কর্য আছে। জেদ্দাসহ বিভিন্ন শহরে ঘোড়া, উটসহ সৌদি প্রশাসকদের ছবি সম্বলিত ভাস্কর্য আছে। এছাড়া জেদ্দায় পৃথিবীর বিখ্যাত ভাস্কর্য দিয়ে জাদুঘর বানানো হয়েছে, যেখানে নারী-পুরুষ, জীবজন্তুসহ বহু কিছুর ভাস্কর্য আছে। মাওলানা রুমিসহ বহু স্কলারের ভাস্কর্য আছে। ”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ভাস্কর্য একটি দেশের ইতিহাস, কৃষ্টি কালচারের অংশ। এসব দেশে এমনকি সৌদি আরবেও এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। যারা পাকিস্তানি ভাবধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাদের অতীত ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, তাদের পূর্ব-পুরুষরা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের জন্য লড়াই করেছিলেন বা পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। তাদের সেই সাধের পাকিস্তানে কায়েদে আজমের ভাস্কর্য আছে, লিয়াকত আলীসহ বহুজনের ভাস্কর্য আছে। সেখানেও কেউ প্রশ্ন তোলেনি। ”

তিনি বলেন, “আমাদের দেশের বহু ভাস্কর্য বিভিন্ন সময়ে নির্মিত হয়েছে, তখন কিন্তু কেউ প্রশ্ন তোলেনি।  এখন এটি নিয়ে প্রশ্ন করা মানে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই, ভারতবর্ষে ইংরেজরা আসার আগে সরকারি ভাষা ছিলো ফার্সি এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে উর্দু ভাষা চালু করা হয়েছিলো। ইংরেজরা এসে ইংরেজি চালু করলো। তখন এই ভারতবর্ষে আজকে যারা ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলছে, তাদের মধ্যে অনেকে ইংরেজি শিক্ষা হারাম ফতোয়া দিয়েছিলো। ”

তিনি বলেন, “মানুষ যখন চাঁদে গেলো তখন ফতোয়া দিয়েছিলো বিশ্বাস করলে হারাম, শিরক হবে। আবার যখন টেলিভিশন চালু হলো তখন দেখা হারাম বলেছিলো। অনেকেই হজে যাওয়ার সময় ছবি দিয়ে দরখাস্ত করা বা ছবি দেওয়া যাবে না এটা নিয়ে বিতর্ক তুলেছিলো। এখন যারা এসব কথা বলেছিলো তারা টেলিভিশনে বক্তব্য দেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গেলে খুশি হন। আসলে এসব কথা বলে তারা সমাজকে বিভ্রান্ত করতে চায়। আমি আশা করবো এ ধরনের বিভ্রান্তমূলক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য তারা পরিহার করবে। এটি কখনো জনগণ মেনে নেয়নি নেবেও না। বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদের, জঙ্গিবাদের স্থান নেই। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২০
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।