ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সিনহা হত্যার মূল নায়ক ওসি প্রদীপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
সিনহা হত্যার মূল নায়ক ওসি প্রদীপ ব্রিফিং/ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: টেকনাফের বাহারছড়ায় মেজর (অব.) সিনহাকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এই হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক ছিলেন তৎকালীন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ।

তার নির্দেশেই পরিদর্শক লিয়াকত টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে মেজর (অব.) সিনহাকে লক্ষ করে গুলি চালায়।

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

তিনি বলেন, মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দিয়েছে র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, হত্যা মামলার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে সিনহাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওসি প্রদীপের নির্দেশেই পরিদর্শক লিয়াকত ৫ সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে হত্যা করেছে। আর এই হত্যাকাণ্ডে ১৫ জন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। এ ১৫ জনের মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি একজন কনস্টেবল সাগর দেবনাথ এখনো পলাতক। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি যেন দেওয়া হয় চার্জশিটে সে সুপারিশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন মেরিন ড্রাইভে বাহারছড়া ক্যাম্পের কাছে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তার মৃত্যুর পর মোট ৪টি মামলা আদালতে দায়ের করা হয়। আদালতের নির্দেশে তদন্ত ভার পায় র‌্যাব। এর একটি টেকনাফ থানায় মাদক সংক্রান্ত মামলা, আরেকটি পুলিশের কাজে বাধাদান সংক্রান্ত এবং রামু থানায় আরেকটি শহিদুল ইসলাম সিফাত ও মেজর সিনহাকে আসামি করে মামলা করা হয়। ইতোমধ্যে র‌্যাব ওই তিন মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ওই তিন মামলা মিথ্যে প্রতীয়মান হওয়ায় এবং মামলার স্বপক্ষে কোনো ধরনের সাক্ষ্য প্রমাণ না থাকায় আসামিদের দায়মুক্তি চেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

‘র‌্যাব তিনটি মামলা ছাড়াও আদালতে মেজর সিনহার বোনের দায়ের করা হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায়। আদালতের নির্দেশক্রমে র‌্যাবের একজন অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার এ বি এম খায়রুল ইসলামকে নিযুক্ত করা হয়। তিনি প্রভাবহীনভাবে তদন্ত কাজ পরিচালনা করেন। আজ এই হত্যা মামলার ২৬ পৃষ্ঠার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। চার্জশিট দাখিল করার ক্ষেত্রে কর্মকর্তা মোট ৪ মাস ১০ দিন সময় নিয়েছেন। এই মামলায় ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯ জন টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্য, তিনজন বরখাস্ত হওয়া এপিবিএন সদস্য, তিনজন বেসামরিক ব্যক্তি। ’

তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে গ্রেফতারের পর কারাগারে রয়েছেন ১৪ জন। একজন পলাতক তিনি হচ্ছেন কনস্টেবল সাগর দে। আরও দুজনকে অভিযুক্ত করে যে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল তাদের নাম ঠিকানা ভুল থাকায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

কর্নেল আশিক আরও বলেন, এই চাঞ্চল্যকর মামলায় র‌্যাব পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। গ্রেফতার ১৪ জনের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। তবে, ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা দায় স্বীকার করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
এসজেএ/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।