ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মশার উপদ্রব মেনেই পদক্ষেপ নিচ্ছে ডিএনসিসি

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২১
মশার উপদ্রব মেনেই পদক্ষেপ নিচ্ছে ডিএনসিসি

ঢাকা: চলতি শীত মৌসুমে রাজধানীতে আবার বেড়েছে মশার উপদ্রব। গেলো বর্ষা মৌসুমের পর মশার উপদ্রব কিছুটা কমে গেলেও এখন আবার নাভিশ্বাস অবস্থা রাজধানীবাসীর।

বিষয়টি মেনে নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
 
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন প্রতিদিনকার মশক অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, মাঝে মশার উপদ্রব ছিল না বললেও চলে। এটা সত্য। সিটি করপোরেশন আর মেয়রের প্রশংসাই করেছি আমরা। ইদানীং আবার উপদ্রব বেড়েছে। অবস্থা এমন যে ঘরের ভেতরে দরজা জানালা বন্ধ রেখেও থাকা যায় না। আর যদি সন্ধ্যার দিকে কোনো একটা জানালা বন্ধ করতে ভুলে যাই তাহলে তো কথাই নেই।
 
কল্যাণপুর এলাকার গৃহিণী মমতাজ বেগম বলেন, বিকেল হলেই মশার তাণ্ডব শুরু হয়। অ্যারোসল, মশার কয়েল কিছুতে কাজ হয় না। সিটি করপোরেশন থেকে নাকি ওষুধ দেয়, সপ্তাহে হয়তো একদিন দেখি। আর দেখি না। সেই ওষুধেও কাজ হয় না। মশা থাকেই।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মশার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ব্রি. জে.) জোবায়দুর রহমান। শীতের ঋতুগত কারণে এবং ডিএনসিসির খাল পরিষ্কার এর জন্য অন্যতম কারণ মনে করছেন এই কর্মকর্তা।  

ব্রি. জে. জোবায়দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শীতের মৌসুমে ঋতুগত কারণে মশা বেড়েছে। কারণ এডিস যেমন পরিষ্কার জমা পানিতে হয় তেমনি কিউলেক্স মশা নোংরা, অপরিষ্কার পানিতে হয়। শীতকালে এখন যে মশা সেটি মূলত কিউলেক্স মশা। অনেক জলাশয় শীতকালে শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানে কিউলেক্স মশা জমছে। আবার বর্ষাকালে জলাশয়ের পানি যেমন বহমান থাকে শীতকালে কিন্তু তেমন না। তাই মশা বেড়েছে।  

‘পাশাপাশি সম্প্রতি আমরা ওয়াসার থেকে খালগুলো বুঝে পেয়েছি। এগুলো আমরা পরিষ্কার করছি। এসব খাল থেকে কচুরিপানা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এসব খাল ও কচুরিপানায় যেসব মশা থাকতো তার একটি অংশ কিন্তু উড়ে লোকালয়ে যাচ্ছে। এটাও একটা কারণ। ’

মশক নিধনে ডিএনসিসির বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে জোবায়দুর রহমান বলেন, করোনার মধ্যে লকডাউনেও আমরা পাঁচবার চিরুনি অভিযান পরিচালনা করেছি। এর জন্য এবছর এডিসের প্রকোপ কিন্তু গতবারের মতো ছিল না। তেমনি কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।  

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে ১০টি ‘মিক্সড ব্লোয়ার’ কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। অল্পকিছু দিনের মধ্যেই এগুলো আমরা হাতে পাবো। ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি মিক্সড ব্লোয়ার কেনা হচ্ছে। এগুলো দিয়ে ওষুধ ছিটানো শুরু হলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।  
 
এদিকে ট্যাবলেটজাতীয় গ্র্যানিউলস ওষুধ প্রয়োগেও ভালো ফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন জোবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, গ্র্যানিউলসগুলো পানির নিচে নির্দিষ্ট গভীরতায় রাখতে হয়। ৯০ দিন পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকে। তাই এই সময় পরে এর ফলাফল বোঝা যায়। আমরা এগুলোর ফল ভালো পেয়েছি। এর আগে ল্যাবটেস্টেও ভালো ফল এসেছিল। আমরা বিভিন্ন জলাশয়ে কাঠির সঙ্গে বেঁধে দিয়েছিলাম গ্র্যানিউলসগুলো। কোথাও কোথাও মানুষের নানাবিধ কারণে কাঠিগুলো সরে গেছে। তাই সেখানকার ফল বোঝা যায়নি।
 
এর বাইরেও বর্তমানে প্রতিদিন সকালে মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য লার্ভিসাইডিং এবং বিকেলে পরিণত মশা নিধনের জন্য অ্যাডাল্ডিসাইডিং করা হচ্ছে। লার্ভিসাইডিংয়ের জন্য টেমিফস ও অ্যাডাল্ডিসাইডিংয়ের জন্য ম্যালেরিয়া অয়েল বি নামে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান জোবায়দুর রহমান। মশক নিধনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ ডিএনসিসির মজুদে আছে বলেও দাবি করপোরেশনের।

আরো পড়ুন>>রাজধানীতে ফের মশার উপদ্রব চরমে
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।