ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঈশ্বরদী-রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প পর্যন্ত ট্রায়াল রান অনুষ্ঠিত 

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২১
ঈশ্বরদী-রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প পর্যন্ত ট্রায়াল রান অনুষ্ঠিত 

ঈশ্বরদী (পাবনা): পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের মালামাল ও যন্ত্রপাতি পৌঁছাতে ঈশ্বরদী-রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প পর্যন্ত রেললাইনের নির্মাণকাজ শেষে ট্রায়াল রান অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প স্টেশন পর্যন্ত ভারী যন্ত্রাংশ গ্যাংকারে পরিদর্শন করেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ পাকশী বিভাগীয় দফতরের কর্মকর্তারা।

      

ব্রিটিশ আমলের বিনা পয়সার ট্রেন 'পাইলট' চলাচলের পরিত্যক্ত রেললাইন সরিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। ঈশ্বরদী-পাকশী পর্যন্ত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মালামাল ও যন্ত্রপাতি পৌঁছাতে প্রায় ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেললাইন ও ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন সংস্কার ও লুপ লাইন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। ভারতের জিপিটি এবং বাংলাদেশের এসইএল ও সিসিসিএল অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ।

এছাড়া ১৩টি লেভেল ক্রসিং গেট, একটি ‘বি’ শ্রেণির স্টেশন ভবন, একটি প্ল্যাটফর্ম এবং সাতটি বক্স কালভার্ট নির্মাণকাজ শেষে এলাকাগুলো ঘুরে দেখেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন-পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প কর্মকর্তা আসাদুল হক, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহীদূল ইসলাম, পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আব্দুর রহিম, পাকশী বিভাগীয় বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী রিফাত শাকিল, পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ) মমতাজুল ইসলাম প্রমুখ।                    

পাকশী বিভাগীয় দফতরের প্রকৌশলী-২ আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, মাটি ভরাট শেষে রেললাইন প্রস্তুত কাজ শেষ। গুরুত্বপূর্ণ লেভেল ক্রসিংগেট, এবং সিগনালিং কাজ ১০ শতাংশের মত বাকি রয়েছে। চলতি বছরের শেষ দিকে কাজ শেষ হবে।     
        
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প কর্মকর্তা, আসাদুল হক বাংলানিউজকে জানান, ঈশ্বরদী থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করতে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে ২২ কিলোমিটার রেললাইনের নির্মাণকাজ শেষ। ট্রয়াল রান অনুষ্ঠিত হলো। এ প্রকল্পের আওতায় ২২ কিলোমিটার রেলপথ ছাড়াও সাড়ে চার কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মাণকাজ শেষ। চলমান কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করা হয়েছে। ৯০ শতাংশ কাজ প্রায় শেষ। বাকি ১০ শতাংশ কাজ চলমান।  

প্রকল্প কর্মকর্তা আসাদুল হক বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলাদেশ গড়ার। বর্তমান রেলবান্ধব সরকারের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে আমরা রেলওয়ের কর্মকর্তা- কর্মচারী সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কারণে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে এ অঞ্চলের। এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে।              

জানা যায়, ১৯১৫ সালে পাকশীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ স্থাপনের কিছুদিন পর তৎকালীন সাঁড়াঘাটের বরফকল থেকে বরফ পরিবহন করার জন্য ব্রিটিশ রেল কর্তৃপক্ষ প্রথমে এখানে রেলপথ স্থাপন করে। পরে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে যাতায়াতের প্রয়োজনে এ রেলপথ দিয়ে 'পাইলট' নামে বিনা পয়সার একটি ট্রেন চালু করা হয়। টিকিট কাটার প্রয়োজনীয়তা না থাকায় রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে স্থানীয় সাধারণ মানুষও বিনা পয়সায় চলাচল করতেন এ পাইলট ট্রেনে।  

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তৎকালীন সরকার কোনো কারণ ছাড়াই পাইলট ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। তারপর এ রেলপথে শুধু রেলের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মোটর ট্রলি মাঝে মধ্যে চলাচল করত। দীর্ঘ দুই যুগেরও পর আবার এ রুটে চলাচল করবে ট্রেন। এতে করে এ অঞ্চলে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। আর সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে এই এলাকার মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২১

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ