ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুরারিকাটি কাঠের সেতু যেন মরণফাঁদ

শেখ তানজির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
মুরারিকাটি কাঠের সেতু যেন মরণফাঁদ কাঠের সেতুটির ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়/ ছবি: বাংলানিউজ

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌর সদরের যুগিবাড়ী সংলগ্ন বেত্রাবতি নদীর ওপর ৭০ বছর আগে নির্মিত মুরারিকাটি তারকনন্দী কাঠের সেতুটি সংস্কারের অভাবে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।

২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কলারোয়া পৌরসভা এলজিইডিতে তারক নন্দী কাঠের সেতুটির স্থলে আধুনিক টেকসই পাকা সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠালেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

বর্তমানে সেতুটির এমনই অবস্থা যে, ভ্যান চালকদের যাত্রী নামিয়ে আগে সেতুর ভাঙাচোরা পাটাতনের এলোমেলে কাঠগুলো হাত দিয়ে কোনোরকম বসিয়ে দিয়ে তারপর পার হতে হয়। অনেক সময় সেতুটি পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়লে ভ্যান মেরামতেই গুণতে হয় কয়েক দিনের মজুরির টাকা। পাটাতনের একটি কাঠের সঙ্গে অন্যটির সংযুক্তি না থাকায় অনেকেই সেতু থেকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন।

মুরারিকাটির তারক নন্দী পরিবারের সদস্য আনন্দ নন্দী বলেন, প্রায় ৭০ বছর আগে মুরারিকাটি গ্রামের তৎকালীন জমিদার তারক নন্দী এলাকার উন্নয়নে বেত্রাবতি নদীর ওপর লোহার ফ্রেম ও কাঠের পাটাতন দিয়ে দক্ষিণ মুরারিকাটি সেতু নির্মাণ করেন। এতে দক্ষিণ মুরারিকাটি, গোপিনাথপুর, পাথরঘাটা, ঘর চালা, কাশিয়াডাঙা, কুমারনল যুগীবাড়িসহ আশপাশের ২০টি গ্রামের মানুষের সঙ্গে কলারোয়া পৌর সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়।

সেতুটি ১৯৫৬ সালে ভেঙে গেলে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েন এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। পরবর্তীতে এলাকাবাসী কাঠ দিয়ে সেতুটি মেরামত করে কোনোরকমে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখেছেন। বর্তমানে সেতুটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অনেক স্থানে কাঠের পাটাতন ভেঙে গেছে। লোহার কাঠামোগুলোতে মরিচা পড়ে অংশ বিশেষ খসে পড়েছে।

মুরারিকাটি এলাকার অমিত কুমার বলেন, উপজেলা সদরে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষ কর্মসংস্থানে যোগদান ও চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের। তবে এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই।

পথচারী শিখা রানী বলেন, সেতুটি একেবারেই নড়বড়ে, চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। হাঁটতে গেলে কাঠগুলো পথচারীদের ঠিক করে নিতে হয়। কয়দিন আগে পাটাতনের কাঠ সরে যাওয়ায় ছোট্ট একটি বাচ্চা নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। এমন ঘটনা প্রায় ঘটছে। এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে কাঠের পরিবর্তে একটি টেকসই পাকা ব্রিজ নির্মাণ করা দরদার।

এ বিষয়ে কলারোয়া পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, তারক নন্দী সেতু বেশ প্রাচীন। কাঠের তৈরি হওয়ায় অনেকটা নড়বড়ে, তবে বিভিন্ন সময়ে মেরামত করা হয়। কাঠের সেতুটির স্থলে ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ১৫০ মিটার টেকসই সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠনো হয়েছে। এছাড়া আপাতত চলাচলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
আরএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।