ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩৪ দিন ধরে ধর্ষণ, পাচারের চেষ্টা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২১
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩৪ দিন ধরে ধর্ষণ, পাচারের চেষ্টা!

টাঙ্গাইল: প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩৪ দিন আটকে রেখে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে গণর্ধষণের পর ভারতে পাচারের উদ্যোগ নেয় অভিযুক্তরা। পরে বিষয়টি টের পেয়ে ওই কিশোরী কৌশলে পালিয়ে আসে নিজের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে।

 

এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে ১৭ অক্টোবর টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করেন।

কিশোরী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাশের ঘাটাইল উপজেলার গৌরিশ্বর গ্রামের আসকরের ছেলে আল আমিনের (২৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই স্কুলছাত্রীর। চলতি বছরের ২১ জুলাই ঈদুল আজহার দিন বিকেলে ওই কিশোরী তার মায়ের সঙ্গে নানাবাড়ি ভূঞাপুরের পৌর এলাকার তেঘরী গ্রামে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে আল আমিনের ফোন পেয়ে ওই ছাত্রী নানার বাড়ি থেকে তার সঙ্গে ঘাটাইল উপজেলার চেংটা গ্রামে যায়।  

আল আমিন কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একটি বাড়িতে রেখে একটানা ২৫ দিন ধর্ষণ করেন। পরে ১৫ আগস্ট সে তার আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে আসে। বাসস্ট্যান্ডে আল আমিনের বন্ধু পাচারকারী চক্রের সদস্য ট্রাকচালক মাসুদের ট্রাকে উঠে তাদের গন্তব্যে রওনা হয়।  

১৬ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ওই স্কুলছাত্রীকে। সেখানে চার-পাঁচজন মিলে কিশোরীকে গণধর্ষণ করে। পরে তাদের আলাপচারিতায় কিশোরী বুঝতে পারে যে, তাকে ভারতে পাচার করার পরিকল্পনা করছে। সে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে ২৫ আগস্ট রাত ৮টার দিকে সেখান থেকে পালিয়ে রিকশাযোগে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ড আসে। সেখান থেকে ২৬ আগস্ট বাড়িতে চলে আসে।

মেয়ের বাবা বলেন, আমার মেয়ে বাড়িতে আসার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া হয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে ঘটনাটি জানাই। আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে ১০ সেপ্টেম্বর মেয়েকে নিয়ে ভূঞাপুর থানায় একটি অভিযোগ করতে যাই। ভূঞাপুর থানার পুলিশ অভিযোগ শুনে মামলা গ্রহণ না করায় আমি আল আমিনকে প্রধান আসামি করে ট্রাক চালক মাসুম, আসকর মল্লিক, নজরুল মল্লিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করি।

তবে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বাংলানিউজকে জানান, এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।  

বাদীপক্ষের আইনজীবী আকবর হোসেন রানা বাংলানিউজকে জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবি টাঙ্গাইলকে তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, এ ধরনের কোনো মামলা এখনও হাতে আসেনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২১
জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।