ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে প্রতিদিন চারটি ধর্ষণ হয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২১
দেশে প্রতিদিন চারটি ধর্ষণ হয় ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দেশে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ধর্ষণ সংক্রান্ত ১ হাজার ১৮২টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ধর্ষণ ৯৫৫টি, দলবদ্ধ ধর্ষণ ২২০টি ও ধর্ষণের চেষ্টা ২৫৯টি।

অর্থাৎ দিনে প্রায় চারটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।  

একই সময়ে রাস্তা, যানবাহন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, এমনকি বাড়িতে দেশের প্রায় ৮৪ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।

‘বাংলাদেশে যৌন হয়রানি: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান দিয়েছে তারা।

এছাড়া নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে নারীদেরকেই রুখে দাঁড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিটি ক্ষেত্রই উদ্বেগজনকহারে বেড়ে চলেছে। এখনই সময় নারীদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

বুধবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে যৌন হয়রানি: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

সালমা আলী বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৮৪ শতাংশ নারী ক্রমাগত রাস্তা, যানবাহনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কর্মক্ষেত্রে এমনকি বাড়িতেও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। জাতীয় দৈনিক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রকাশ করে যে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ধর্ষণের ঘটনার সংখ্যা ১১৮২টি (ধর্ষণ ৯৫৫টি, গণধর্ষণ ২২০টি, ধর্ষণের চেষ্টা ২৫৯টি)।

গোল টেবিল বৈঠকে আরও বলা হয়, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিদিনই দেখছি নারীরা তাদের কর্মক্ষেত্রে কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দেশের প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রেই যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নিশ্চিত ও কার্যকর করা গেলে নারীদের প্রতি এই ধরনের সহিংসতার ঘটনারোধ করা সম্ভব। নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হলেও চাকরি হারানোর ভয়ে, সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে তারা অভিযোগ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে নারীর প্রতি সমাজের সবার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে।

তারা আরও বলেন, অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করার ফলে ধর্ষণ ও সহিংসতার ঘটনা বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশে যৌন হয়রানির বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা দেশে নারীরা অসহায়। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সোচ্চার হওয়ার মতো কাউকে তারা পায় না।  

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি সমসাময়িক যৌন হয়রানির ও সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং বর্তমানে সংঘটিত সব যৌন হয়রানি ও সহিংসতার অপরাধের জন্য দায়ী অপরাধীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার দাবি করছে।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোবায়দা পারভিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ট্রেজারার ড. রাশেদা আক্তার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২১
এইচএমএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।