ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এবার পূজাতেও প্রতিমা শিল্পীদের কপালে জুটলো চিন্তার ভাঁজ!

জয়ন্ত জোয়ার্দ্দার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
এবার পূজাতেও প্রতিমা শিল্পীদের কপালে জুটলো চিন্তার ভাঁজ!

মাগুরা: আর মাত্র কয়েকদিন বাকি সরস্বতী পূজার। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে, কল্যাণময়ী দেবীর চরণে ফুল দিয়ে প্রণতি জানাবেন ভক্তরা।

দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানলোকের প্রতীক। তাই তার কৃপা লাভের আশায় অনুষ্ঠিত হয় পূজা-অর্চনা। কিন্তু এ বছরও প্রতিমা শিল্পীদের কপালে জুটেছে চিন্তার ভাঁজ। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রতিমা বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কারিগররা।

মাগুরা শহরের বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছোট বড় দিয়ে মোট তিনটা কারখানা রয়েছে এই গ্রামে। প্রতিটা কারখানায় শতাধিক প্রতিমা তৈরি হয়েছে। সবকয়টি প্রতিমা রোদে শুকানোসহ চলছে সাজ-সজ্জার কাজ।

ছানা বাবুর বটতলা সরস্বতী পূজার আয়োজক বাপি সাহা বাংলানিউজকে বলেন, করোনার মাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে, কোনো লোক সমাগম করা যাবে না। তাই এ বছর সল্প পরিসরে পূজা করা হবে। তবে কোনো উৎসব আমেজ থাকছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেবীর আরাধনা ও অঞ্জলি দেওয়া হবে।

প্রতিমা শিল্পী মানিক বৈদ্য বলেন, দুই মাস ধরে দিন রাত পরিশ্রম করে সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছি। হঠাৎ করোনা বেড়ে যাওয়ায় স্কুল, কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। যে কারণে পূজার সংখ্যার কমিয়েছেন আয়োজন কমিটি। বিশেষ করে স্কুল-কলেজে বেশি সরস্বতী পূজা হয়। এ বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পূজা হবে না। অনেকেই বায়না করা প্রতিমার টাকা ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন। এতে আমরা প্রতিমা শিল্পীরা লোকসানে আছি। কারখানায় থাকা প্রতিমাগুলো বিক্রি হবে না। আমরা কিভাবে চলবো। এই প্রতিমা বিক্রি টাকায় আমাদের সংসার চলে।  

তিনি আরো বলেন, আমার কারখানায় ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমা রয়েছে। যারা বাড়িতে পূজা করতো তারাও পূজা করছে না। প্রতিমা যদি বিক্রি না করতে পারি তাহলে চরম লোকশান হবে আমাদের।

ডাটিকাডাঙ্গা গ্রামের বনগাঙ্গা নদীর পাড়ে রয়েছে আর একটি প্রতিমা তৈরি কারখানা সেখানে কথা হয় প্রতিমা শিল্পী সরজিত অধিকারের সঙ্গে তিনি বলেন, আমার কারখানায় প্রায় ১০ জন লোক রয়েছে। তারা দিনরাত পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরি করছেন। তাদের বেতন, রং, তুলির দাম বৃদ্ধি। তাছাড়া প্রতিমা বিক্রি করতে পারছি না। কমচারীদের বেতন দিতে পারছি না। আমাদের এই প্রতিমা তৈরির টাকা থেকে সংসার খরচসহ সকল প্রকার ব্যয় হয়ে থাকে। এ বছর অধিকাংশ প্রতিমা কারখানায় পড়ে থাকবে। প্রতিমা বিক্রি না হলে আমরা চরম লোকসানের মুখে পড়বো।

মাগুরা কালিবাড়ি পূজা মন্দির প্রহিত সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে ভক্তরা প্রণতি জানান। দেবীর সামনে হাতেখড়ি দিয়ে শিশুদের বিদ্যাচর্চা শুরু হয়। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে অঞ্জলি দেওয়া হয় দেবীর চরণে। আয়োজন করা হয় বানী অর্চনার । প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান হয়ে হয়। এ বছর তার কিছুই হবে না। স্বল্প পরিসরে স্বরসতীর পূজা করা হবে। কোন উৎসব আমেজ থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।